ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কাউরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে অভিভাবকেরা গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন থেকে বেশির ভাগ অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না।
অভিভাবক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, গত তিন বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে ব্যবস্থাপনা কমিটি না থাকায় শিক্ষকেরা পাঠদানে অমনোযোগী। এ কারণে ২০১৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভালো ফল হয়নি। বারবার কমিটি করতে বলা হলেও তা করা হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের সমন্বয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকার নিয়ম থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে তিন বছর ধরে এ কমিটি নেই। এতে শিক্ষকদের ওপর কমিটির নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তাঁরা পাঠদানে অবহেলা করে আসছিলেন। বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে তিন শ শিক্ষার্থী রয়েছে। গত বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে ৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ‘সি’ গ্রেড পায়। এর জের ধরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। অভিভাবকসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আলী হায়দার, দাতা সদস্য মিরাস উদ্দিনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। পরে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়ে তালা খুলে দেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। অনেক অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আলী হায়দার বলেন, কমিটি না থাকায় বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি অনেকবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর জের ধরে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানো থেকে অধিকাংশ অভিভাবক বিরত রয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেনমন্থেনা সুলতানার মুঠোফোনে গতকাল রোববার ফোন করা হলে তিনি কথা বুঝতে পারছেন না বলে সংযোগ কেটে দেন। পরে অনেকবার ফোন করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
গৌরীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি জানার পর গতকাল ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতে বলা হয়েছে।