করোনা ভাইরাস : চিকিৎসা কী? - দৈনিকশিক্ষা

করোনা ভাইরাস : চিকিৎসা কী?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম উপসর্গ সাধারণ সর্দি-জ্বরের মত হলেও এ ভাইরাস এরইমধ্যে কেড়ে নিয়েছে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণ, আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে কীভাবে?

এ ভাইরাসকে বলা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস বা ২০১৯-এনসিওভি। মাত্র এক মাসের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনের বাইরে আরও অন্তত দুই ডজন দেশে।

সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য এই ভাইরাস ছড়াতে পারে মানুষ থেকে মানুষে। এ ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। 

করোনা ভাইরাস: বাঁচতে সতর্কতা  | ছবি: সংগৃহীত

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

সর্দি-জ্বরের যেমন বিশেষ কোনো চিকিৎসা নেই,  করোনাভাইরাসেরও তেমন বিশেষ কোনো চিকিৎসা নেই। কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি না হওয়ায় আপাতত নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হল, যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে কফ অথবা রক্ত পরীক্ষা করে সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে ভর্তি হলে তার মধ্যে যে উপসর্গগুলো আছে, সেগুলো সারাতেই মূলত চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ভাইরাসকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালাতে থাকে।

বিশেষায়িত চিকিৎসা না থাকলে রোগীকে হাসপাতালে রাখা জরুরি কেন? তাতে রোগীকে আলাদা করে ফেলে রোগ ছড়ানোর পথটাও বন্ধ হয়।

“হাসপাতালে থাকলে রোগী অন্য মানুষের স্পর্শে কম আসেন এবং এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ভাইরাসের অন্য মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কমে আসে,” বলেন নটিংহাম ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জোনাথন বল।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মানুষের শরীরে এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট।

অধ্যাপক বল বলেন, নিউমোনিয়ার মত স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিলে রোগীকে প্রয়োজনে অক্সিজেন দেওয়া যেগে পারে। জটিলতা বেড়ে গেলে ভেন্টিলেটশনে (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসযন্ত্র)  রাখা যেতে পারে। এরকম রোগীদের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের অবস্থা এরকম সঙ্কটাপন্ন হতে পারে। 

যদি রোগীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকে সেক্ষেত্রে আইভি স্যালাইন দেয়ার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসকরা। ডায়রিয়া হলে ঘন ঘন তরল এবং জ্বর ও ব্যথা উপশমে আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক খেতে দিতে পারেন।

উহানের জিনিইনতান হাসপাতালের প্রধান ঝ্যাং দিংয়ু রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিকে বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে যারা সেরে উঠেছেন, তাদের অবস্থা এখন ভালো।

টিকা কতদূর?

বিবিসি লিখেছে, নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বানানোর গবেষণা পুরোদমে চললেও, তাতে কয়েক বছরও সময়ে লেগে যেতে পারে।

করোনাভাইরাস পরিবারের সদস্য সার্সের (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল ২০০২ সালে। এরপর ২০১২ সালে আসে মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) করোনাভাইরাস। এ দুই ভাইরাসের টিকা এখনও তৈরি হয়নি।

অধ্যাপক বল বলেন, যে কোনো টিকার ক্ষেত্রে আগে প্রাণীর শরীরে এর কার্যকর ও নিরাপদ প্রয়োগের প্রমাণ থাকা জরুরি। তারপর মানুষের শরীরে এর পরীক্ষা সফল হলে সেই টিকা লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন পেলে তবেই সেই টিকা ব্যবহার করা যায়।

এইচআইভির ওষুধ লোপিনাভির এবং রিটোনাভির  নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎকায় কাজ করে কি-না তা বোঝার চেষ্টা করছেন চীনের বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, ২০০৩ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় এইচআইভির ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করেছিল।

ভাইরোলজিস্ট জোনাথন বল বলেন, গবেষকরা আশা করছেন, নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও হয়ত কাছাকাছি ফল পাওয়া যাবে।

 

আরও পড়ুন: 

করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে হটলাইন চালু

করোনা ভাইরাস : বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা

করোনা ভাইরাস : সচেতনতা ও করণীয় 

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059089660644531