কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা লুটকারী সদস্য-সচিবদের অন্যতম রাজধানীর আল হেরা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদের শাস্তি দাবি করেছেন অবসর ও কল্যাণের টাকার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা শিক্ষকরা। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরবর্তী তিন বছর তিনি কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব ছিলেন। শিক্ষকদের জমানো দুশো কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে সরিয়ে বিতর্কিত ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে জমা করে নিজে লাভবান হয়েছেন। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা যায়।
দুর্নীতির দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ওরিয়েন্টাল ব্যাংকটি বন্ধ করে দেয়। মুগিস মাহমুদ গত বছর আগস্টে অবসরে যান। হাজার হাজার শিক্ষক যখন অবসর ও কল্যাণের টাকার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন ঠিক তখন এই মুগিসের বাসায় কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পৌঁছে দেন কল্যাণের বড় কর্মকর্তারা। অবসরের এক মাসের মধ্যে কল্যাণ সুবিধা পান অঢেল টাকার মালিক ও রিয়েলে এস্টেট ব্যবসায়ী অধ্যক্ষ মুগিস মাহমুদ। তার শাস্তি দাবি করেছেন বছরের পর বছর টাকা না পাওয়া শিক্ষকরা। কল্যাণ ট্রাস্টের লুট করা টাকা উদ্ধার করে দ্রুত শিক্ষকদের দিয়ে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
দৈনিক শিক্ষার কাছে ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, কল্যাণ ট্রাস্টের অফিসে ঘুরতে ঘুরতে জুতা ক্ষয় হচ্ছে কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। অথচ কাজী ফারুক, মুগিস মাহমুদ, সেলিম ভূঁইয়ারা কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব থাকাকালে এই ফান্ডের কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে জমা রেখে সুদ খেয়েছেন।
মুগিস মাহমুদের জমানায় কোন ব্যাংকে কত টাকা ছিল এবং সুদের টাকা কোথায় গেল তা অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল।
জানা যায়, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মুগিস মাহমুদের অঢেল সম্পদের উৎস অনুসন্ধান শুরু হয়। দেখা যায় সাবেক ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে [বর্তমানে আইসিবি ব্যাংক] মুগিসের ১৭টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওইসব অ্যাকাউন্টে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকাও জমা ছিল। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মুগিস মাহমুদ কিছুদিন ভারতে পালিয়ে ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি অবসর ও কল্যাণের সাবেক সদস্য সচিব ও বিএনপির নেতা এবং বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার অনুসারী হিসেবে শিক্ষক মহলে পরিচিত।