কাগুজে সাংস্কৃতিক সংগঠন - দৈনিকশিক্ষা

কাগুজে সাংস্কৃতিক সংগঠন

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

শুধু শিক্ষায় নয়, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছিল আরো অনেক ক্ষেত্রেই। রাজনীতি, সংস্কৃতি, খেলাধুলা—সব ক্ষেত্রেই এ বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত সব আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা। সেসব আজ শুধুই অতীত। কয়েক দশক ধরে ডাকসুর অস্তিত্ব নেই। টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজিতে ঢাকা পড়েছে এখানকার ছাত্ররাজনীতির গৌরবময় অতীত। ক্রীড়াচর্চা নেই বললেই চলে। সংস্কৃতিচর্চার সেই জৌলুস হারিয়েছে অনেক আগেই। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ঐতিহ্য ধরে না রাখতে পারলেও সংশ্লিষ্ট খাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ কমেনি। নামসর্বস্ব অনেক সংগঠন রয়েছে এবং তাদের প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা বরাদ্দও দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ হয়েছে প্রায় ৫৬ লাখ টাকা।

অনেক সংগঠনকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র বা টিএসসিতে কক্ষও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব কক্ষের বেশির ভাগ প্রায় সারা বছরই বন্ধ থাকে, না হয় অন্য কাজে ব্যবহূত হয়। অনেক সংগঠনের নামও শোনেনি শিক্ষার্থীরা। তাহলে এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের উদ্দেশ্য কী?

আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ের তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান যেমন দেখা হয়, তেমনি দেখা হয় শিক্ষার্থীদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মানও। সব মিলিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধোগতি। এই ব্যর্থতার দায় কার? প্রতিবছর অর্ধকোটি টাকার ওপর খরচ করা হলেও সেই টাকা কারা নেয়, কী করে—সেসব কি যথাযথভাবে তদারকি করা হয়? টিএসসিতে অর্ধশতাধিক সংগঠনের জন্য কক্ষ বরাদ্দ রয়েছে। তারা সেখানে কে কী করে টিএসসি কর্তৃপক্ষ কি তা ঠিকমতো দেখভাল করছে? ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ হলেও নানা সংগঠনের আড়ালে টিএসসিতে তারা সক্রিয় রয়েছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও উল্লেখ রয়েছে। কে জানে তাদের আড়ালে জঙ্গিরাও এখানে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালায় কি না!

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনোদৈহিক বিকাশ ত্বরান্বিত করাও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সত্যেন বসু, কাজী মোতাহার হোসেন, গোবিন্দচন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরীদের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অনেক শিক্ষক একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আলোকিত করেছেন। শিক্ষার পাশাপাশি তাঁরা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন। তাদের সঠিক পথে পরিচালনার চেষ্টা করেছেন। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়েছিল। আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন দৈন্যদশা কেন? বর্তমান প্রশাসনকে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে এবং তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং কোথাও অপচয় হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.023416996002197