কী মধু শিক্ষা ভবনে? - দৈনিকশিক্ষা

কী মধু শিক্ষা ভবনে?

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং স্থান সংকুলান না হওয়ায় চারটি প্রকল্প অফিস নায়েমে স্থানান্তর করার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মানছেন না বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কতিপয় কর্মকর্তা। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন বিতর্কিত কয়েকজন কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তা ১৫/২০ বছর ধরে শিক্ষা ভবনের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছেন আর মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা ভবন কেন্দ্রিক বদলি, ভর্তি ও এমপিও বাণিজ্য করে আসছেন যুগ যুগ ধরে।

জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষার মানোন্নয়নের চারটি প্রকল্পের অফিস ও জনবল ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নায়েমে স্থানান্তর করার আদেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ১৭ ফেব্রুয়ারি আদেশ জারি করা হয়। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তেই তা করা হলেও  কয়েকজন প্রকল্প কর্মকর্তা বলছেন, তারা নায়েমে (জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি, ঢাকা কলেজ সংলগ্ন) যাবেন না; প্রকল্পের কার্যক্রম এবং জনবলও স্থানান্তর করবেন না। কথিত পরিদর্শন করিয়ে খোঁড়া যুক্তি দেখিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কতিপয় জামাত-বিএনপিপন্থি শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। সাথে নিয়েছেন কতিপয় সংবাদকর্মীকেও।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক বলেন, ‘প্রকল্পগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে শিক্ষা ভবনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে সবকটি প্রকল্পের অফিসই শিক্ষা ভবন থেকে সরানো হবে।’ 

যে চারটি প্রকল্পকে শিক্ষা ভবন ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্প ২য় পর্যায়, সেকেন্ডারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড প্রজেক্ট, মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্প (পর্যায়-২) এবং সরকারি কলেজসমূহের বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্প।

নায়েমে না যাওয়ার জন্য এক উদ্ভট চিঠি লিখেছেন সরকারি কলেজসমূহের বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) প্রফেসর নুরুল হুদা। তিনি দাবি করেন নায়েম অনেক দূরে, তার ব্যবহারের জন্য টয়লেট নেই! নায়েমের ভবন ৬২ বছরের পুরনো। ইত্যাদি ইত্যাদি। নায়েমের মহাপরিচালকসহ সব প্রধান কর্মকর্তাই বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের। শিক্ষা ভবনের বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুকও নায়েমের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি এখনও নায়েমে রাত্রিযাপন করেন। অথচ সেই নায়েমের বিরুদ্ধে খোঁড়া যুক্তি দিচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডারেরই কতিপয় কর্মকর্তা। 

সেকেন্ডারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড প্রজেক্টের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা যিনি প্রায় ১৮ বছর ধরে ঘুরে ফিরে শিক্ষা ভবনেই আছেন, তার যুক্তি হলো: নায়েমের পরিত্যক্ত একটি ভবনে আমাদের অফিস স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। পরিত্যক্ত ভবনে আমরা কেন যাব? আমরা তো মাউশির কাজই করছি।’ 

দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, এই বিতর্কিত কর্মকর্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলি, ভর্তি ও এমপিও বাণিজ্য করেন। একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। নায়েমে গেলে ওই সিন্ডিকেট ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় বিরোধিতা করছেন বলে ওই প্রকল্পের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন।

রাজধানীর আবদুল গণি রোডে শিক্ষা ভবনে মাউশি অধিদপ্তর অবস্থিত। ওই চারটি প্রকল্পসহ মাউশি অধিদপ্তরের অধীনে বর্তমানে ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, যেগুলোর দাপ্তরিক কার্যক্রম শিক্ষা ভবন থেকে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পগুলো হলো সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) প্রকল্প, শিক্ষার মানোন্নয়নে জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা মহানগরীতে ১১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬টি মহাবিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজসমূহের উন্নয়ন প্রকল্প (১৫০০কলেজ), সিলেট বরিশাল ও খুলনা শহরে ৭টি সরকারি হাই স্কুল স্থাপন প্রকল্প, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা শহরের সন্নিকটবর্তী ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প এবং ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটি।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074880123138428