কোচিংয়ে লিপ্ত রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩০ জন শিক্ষক। তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- দিবা শাখা ও ইংলিশ ভার্সনের সহকারী শিক্ষক মোঃ সাহেদুজ্জামান, শেখ জিয়াউর রহমান, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ কামরুল ইসলাম, মোঃ মাসুদুর রহমান, দিবা শাখা ও বাংলা ভার্সনের সহকারী শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক, ইংরেজি মাধ্যমের দিবা শাখার সিনিয়র শিক্ষক মশাল চন্দ্র মণ্ডল, মোঃ মশিউর রহমান, বাংলা মাধ্যমের দিবা শাখার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুর হাসান, নাজিম উদ্দিন, কলেজ শাখার (দিবা) প্রভাষক জন ফ্লেবিয়ান গোমেজ, সহকারী অধ্যাপক (প্রভাতি) আইয়ুব আলী খান, দিবা শাখার প্রভাষক মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, মোঃ বজলুর রহমান, মোঃ হারুন-অর-রশিদ, মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, সুকান্ত চন্দ্র সাহা, এইচ এম গিয়াসঊদ্দীন, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মনিরুজ্জামান, মোঃ মোশারফ হোসেন, গাজী আবুল বাশার, মোঃ আরিফুল ইসলাম, কলেজ শাখার (প্রভাতি) মোঃ সাইফুল ইসলাম, কলেজ শাখার প্রভাষক (প্রভাতি) মোঃ রাসেল, মোঃ দাউদ ইকবাল, মাহবুব আলম বাচ্চু, এ কে এম মাসুদ রানা এবং মোঃ আজগর আলী।
তারা সবাই ২০১৭ খিস্ট্রাব্দে কোচিং করাবেন না, এই মর্মে অঙ্গীকারনামা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু অঙ্গিকার ভঙ্গ করেছেন।
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানা যায়, ২০১২ খ্রীস্টাব্দের ২০ জুন কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে নীতিমালা তৈরি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালায় নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিজ বাসায় পড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে লিখিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীর নাম ও রোল নম্বরসহ তালিকা জানাতে হবে। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ওই ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজনকে পড়ালেও তাকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কোচিং সেন্টারের নামে বাসা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে। এমনকি কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা কোচিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত হতে পারবেন না।
শাস্তির বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে সাময়িক বা চূড়ান্ত বরখাস্ত, এমপিওভুক্ত শিক্ষক হলে এমপিও স্থাগিত, বাতিল, বেতন-ভাতাদি স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিতকরণ ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
দুদক হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ নভেম্বর ওই স্কুলে অভিযান চালায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. জাভেদ হাবীব এবং উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত একটি দল।
সরেজমিন পরিদর্শনে দুদক টিম দেখতে পায়, উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ২০১৭ খ্রীস্টাব্দে কোচিং করাবেন না, এই মর্মে অঙ্গীকারনামা প্রদান করা সত্বেও নীতিমালা ভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করছেন। দুদক টিমের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে এ অনিয়মের সাথে জড়িত ৩০ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম দেখতে পায় যে, নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় বেশ কয়েকটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া সত্বেও একজন শ্রেণিশিক্ষক তাদের দশম শ্রেণিতে ভর্তি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। দুদক টিমের উপস্থিতিতে এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।