চবিতে রাতে গাছ কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা - Dainikshiksha

চবিতে রাতে গাছ কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা

চবি প্রতিনিধি |

সুযোগ পেলেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস, বিজ্ঞান অনুষদের ভেতরের পাহাড় ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের আশপাশ থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের যোগসাজশে রাতের আঁধারে এসব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে তারা।

তবে বেশিরভাগ সময়েই এসব ঘটনা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রায়সময় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। বেশকিছু দিন ধরে চালানো অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।

কিন্তু এ ধরনের ঘটনার তেমন কোনো রেকর্ডও নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত রোজার ঈদের দুইদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভেতরের পাহাড় থেকে দুটি গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত হলে কাটা গাছ ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মতে, শুধু ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় অর্ধ-শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের। সূত্রটি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাতের আঁধারে গাছ কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ সংরক্ষণের জন্য কর্মী রয়েছে মাত্র ৮ জন।  যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদের আবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অন্য কাজেও ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন ৩০ থেকে ৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী।  যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো সহ আবাসিক হলগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। কর্মী সংকটের কারণে তাদের পক্ষে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। আবার এদের মধ্য থেকে কিছু কিছু নিরাপত্তাকর্মীকে ম্যানেজ করে গাছ কেটে চোরাই পথে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মো.বজল হক বলেন, ‘সবখানে-তো নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যেমন-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ে, ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটের ওদিকে নিরাপত্তাকর্মী থাকে না। হয়তো ওদিক দিয়ে চুরি করে থাকতে পারে।’

নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আগে অভিযোগ ছিল, এখন নেই। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো এলাকার গাছ লাগানো ও সংরক্ষণের দায়িত্ব ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল

সায়েন্সেসের অধীনে।  নিরাপত্তাকর্মীদের ম্যানেজ করে চোরাই পথে দুর্বৃত্তরা গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন এই ইনস্টিটিউটের দায়িত্বপ্রাপ্তরাও।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড.খালেদ মিসবাহুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছে বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি করে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার খবর আসে।  তবে কি পরিমাণ গাছ কাটা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। গাছ সংরক্ষণের জন্য কর্মী আছে মাত্র ৮ জন। তাদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবার অন্য কাজও করান।

‘মূলত রাতে যারা নিরাপত্তায় থাকেন তাদের ম্যানেজ করে দুর্বৃত্তরা চোরাই পথে গাছ কেটে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল সংখ্যক গাছ রয়েছে এবং জায়গাটাও অনেক বড়। এজন্য কম হলেও ২০জন কর্মী গাছ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজন। যাদের কাজ শুধু গাছ সংরক্ষণ করা। ’ বলেন মিসবাহুজ্জামান ।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যাদের নিয়োগ দেবেন তারা যেন স্থানীয় না হয়। যদি স্থানীয় হয় তাহলে তারা একদিকে যেমন কাজে ফাঁকি দেয়, অন্যদিকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজেও জড়িত থাকার সম্ভাবনা থাকে। ’

এভাবে গাছ কাটার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.কামরুল হুদা বলেন, ‘কিছুদিন আগে বিজ্ঞান অনুষদের ওদিকে দুর্বৃত্তরা দুটি গাছ কাটার খবর পেয়েছিলাম। যে গাছগুলো আমরা আটক করে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছি। এ ছাড়া আমাদের কাছে আর কোথাও দুর্বৃত্তরা গাছ কাটছে বলে খবর নেই।’

তিনি বলেন, ‘যেসব নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদারের জন্য আরও শতাধিক নিরাপত্তকর্মী বাড়ানো হচ্ছে। সেই হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকাজে প্রায় ২৫০ জন থাকবে। আশা করছি নিরাপত্তার ঘাটতি আর থাকবে না।’

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012758016586304