বরিশালের মুলাদী সরকারি ডিগ্রি কলেজের দুই শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে উপজেলার মোল্লাবাজার এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মুলাদী সরকারি ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞান প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. শাহাদাত এবংব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. আলী হাসান। দুজনই ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে জানিয়েছেন কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, তাঁরা দুজনই মামলার আসামি। বাকি আসামিদের অবস্থান জানতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং অভিযান চলছে। শিগগিরই সব হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে বলেও ওসি আশা প্রকাশ করেন।
মুলাদী সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ছাত্র মো. শাওন গত মঙ্গলবার সকালে কলেজের পরিচয়পত্র না দেখিয়ে একাডেমিক ভবনের দোতলায় যাচ্ছিলেন। এ সময় কলেজের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সদস্য প্রভাষক আবদুল আলীম ও হাফিজুর রহমান তাঁকে বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাওন শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা শাওনকে আটক করে শিক্ষকদের কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরে ক্ষমা চাইলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ক্ষুব্ধ শাওন ১০-১২ জন সহযোগী নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। লাঠিসোঁটা ও রড নিয়ে তাঁরা ২০২ নম্বর কক্ষে ঢুকে প্রভাষক আবদুল আলীমকে বেধড়ক মারধর ও কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন। এ সময় শিক্ষক হাফিজুর রহমানকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তাঁরা। এতে শিক্ষক আবদুল আলীম গুরুতর আহত হলে তাঁকে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওই দিন বিকেলেই ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মুলাদী থানায় মামলা করেন।
অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পর কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া শাওনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে বুধবার ‘ছাত্রলীগ কর্মীর নেতৃত্বে শিক্ষককে পিটিয়ে আহত’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।