যশোরের মণিরামপুরে রাতে কোচিং করতে গিয়ে নিজ মাদরাসার শিক্ষকের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী। গত সোমবার রাতে উপজেলার ঝাঁপা দক্ষিণপাড়া মহিলা দাখিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদরাসায় হামলা চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক নজরুল ইসলামকে মারধর করে।
পরে তারা মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট (অধ্যক্ষ) কে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে বিকালে মণিরামপুর থানা পুলিশ মাদরাসায় গিয়ে সুপার শাহাদাৎ হোসেনকে উদ্ধার করে। এরপর সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। রাতে এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় অভিযুক্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলামের নামে মামলা হয়েছে এবং ওই দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, গত ১৫-২০ দিন ধরে ওই মাদ্সায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের রাতে কোচিং ব্যবস্থা চালু করেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন দুইজন করে শিক্ষক ১৫-১৭ জন শিক্ষার্থীর কোচিং করান। গত সোমবার কৃষিশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক (মৌলভী) নজরুল ইসলাম কোচিং করান।
কোচিং শেষে সব শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরলেও ফেরেনি ওই ছাত্রী। এরপর রাত ৯টার দিকে স্বজনরা তার খোঁজে মাদরাসায় আসেন। তারা মাদ্রাসায় এসে কাউকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মাদরাসার টয়লেটের গলিতে গিয়ে ওই ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান পড়ে থাকতে দেখেন।
পরে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নেয়া হয়। জ্ঞান না ফেরায় রাত দুইটার দিকে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বুধবার বাড়িতে ফিরে ওই ছাত্রী পিতামাতাকে সব খুলে বলে। পরে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার মাদরাসায় হামলা চালায়। মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট শাহাদাত হোসেন জানান, গত সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার।
এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদকে ডেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র বলেন, শনিবার মাদ্রাসা খুললে সুপারিনটেনডেন্টকে জানতে চাওয়া হবে কার অনুমতিতে রাতে ছাত্রীদের কোচিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
এ ছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মণিরামপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দুই শিক্ষককে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তাদের আটকের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।