বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হকের ১৫ দিনের ছুটির আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন রাষ্ট্রপতি। বুধবার (১৭ এপ্রিল) আবেদনটি মঞ্জুর হয় বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে উপাচার্য পদত্যাগ না করে ছুটিতে যাওয়ায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি তাকে পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে পাঠাতে হবে, অন্যথায় তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
এদিকে, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা সহ ৮ দফা দাবিতে টানা চারদিনের (প্রতিদিন ২ ঘন্টা) অবস্থান কর্মসূচি শেষে বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা ঘোষণার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা।
উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে চলমান আন্দোলনের ২২তম দিন বুধবার সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, ৪ দিন ধরে ৮ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরও সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না আসায় বৃহস্পতিবার উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।
উপাচার্যের ছুটি প্রসঙ্গে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য রাম চন্দ্র দাস বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি (উপাচার্য) ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন। আবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বলা হয়েছিল, ছুটির মেয়াদটা তার বাকী সময় (আগামী ২৪ মে) পর্যন্ত বাড়িয়ে নিতে। উপাচার্য বলেছেন তিনি ভেবে চিন্তে দেখবেন। এখন উনি ছুটি বাড়াতেও পারেন, নাও পারেন। এটা একান্তই তার বিষয়।
উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক মুঠোফোনে বলেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন। এরপর নতুন করে কোনো ছুটির আবেদন করেননি। সময় বাড়িয়ে নতুন আবেদন করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করছেন না।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোয় প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের উপাচার্য ‘রাজাকারের বাচ্চা’ কটাক্ষ করেন অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিবাদে এবং ওই মন্তব্য প্রত্যাহার সহ ১০ দফা দাবিতে ২৭ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ২৮ মার্চ থেকে ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। শিক্ষার্থীরা ওই আদেশ অমান্য করে ওইদিনই তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। উপাচার্য ২৯ মার্চ তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলে তাতেও মন গলেনি শিক্ষার্থীদের। তারা তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মশাল মিছিল, রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখন, প্রতীকী অনশন, কালো কাপড় মুখে বেধে বিক্ষোভ এমনকি মহাসড়ক পর্যন্ত অবরোধ পর্যন্ত করে তারা।