জাতীয় বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের ভাবনা | মতামত নিউজ

জাতীয় বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের ভাবনা

আমরা যদি প্রতি অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যায় যে, বাজেটে শিক্ষা খাতের সঙ্গে সব সময়ই প্রযুক্তি বাজেট সংযুক্ত থাকে। অথচ সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে শিক্ষাখাতের বাজেট ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা উচিত। উদাহরণ হিসেবে যদি গত বছরের বাজেটেও দেখি, শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তিকে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ফল

প্রতি অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যায়, বাজেটে শিক্ষা খাতের সঙ্গে সব সময়ই প্রযুক্তি বাজেট সংযুক্ত থাকে। অথচ সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে শিক্ষাখাতের বাজেট ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা উচিত। উদাহরণ হিসেবে যদি গত বছরের বাজেটেও দেখি, শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তিকে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ফলে কার্যত শিক্ষাখাতের প্রকৃত বাজেট পরিকল্পনাটি অস্পষ্ট রয়ে গেছে।

গতবারে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দ ১৫ দশমিক ২ শতাংশ দেখালেও মূলত শিক্ষাখাতের জন্য বরাদ্দ ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। জিডিপির শতাংশ হারেও শিক্ষাখাতের বাজেট বরাদ্দ স্থবির রয়েছে। শিক্ষাখাতের বাজেট বরাদ্দ গত বছরেও জিডিপির ২ দশমিক ১০ শতাংশ। অথচ ইউনেসকো এডুকেশন ফ্রেমওয়ার্কে (বাংলাদেশের অনুস্বাক্ষরকারী ও সমর্থনকারী দেশ) একটি দেশের জিডিপির ৪-৬ শতাংশ ও মোট বাজেটের ১৫-২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেও উল্লেখ আছে জিডিপির অন্তত ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখার। অথচ প্রতিবছরই শিক্ষাখাতের এই আর্থিক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ছাড়া অন্য সব দেশ শিক্ষাখাতে জিডিপির শতাংশ হারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ব্যয় করে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা শিক্ষাখাতে যথাক্রমে জিডিপির ৩ দশমিক ৮, ৩ দশমিক ৭ ও ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যয় করে। ভুটানের শিক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির ৬ শতাংশ।

করোনা মহামারির এ দুঃসহ সময়ে মানুষের আয় রোজগার কিছু কম হলেও থেমে নেই মানুষের আহার। সরকার প্রনোদনার মাধ্যমে সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে; একসময় ইনশাল্লাহ সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আগামী ১১ জুন যথারীতি জাতীয় বাজেট ঘোষণা হবে। বাজেট এভাবে আসে-যায়, কিন্তু দেশের ৯৭ শতাংশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈষম্যগুলো নিরসন হয় না। 

বাংলাদেশের কাছাকাছি নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ যেমন- ফিলিপাইন, মালয়েশিয়াসহ প্রায় ২২টি দেশ তাদের বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সরকারিকরণের মাধ্যমে বিশ্বের উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। বর্তমান সরকারের এটা একটা বিরাট সুযোগ বেসরকারি শিক্ষাকে রাজস্ব খাতে নিয়ে এসডিজি ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের বীজ বপণ করা। মনে রাখবেন, শিক্ষাকে এভাবে অবহেলায় রাখলে আমরা আরও অন্তত ২০ বছর পিছিয়ে যাব। তাই এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখার ও সব বেসরকারি (ইআইআইএন প্রাপ্ত) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে সরকারিকরণের বরাদ্দ রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।

লেখক : মো. দিদার হোসেন, সহকারী মহাসচিব, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]