কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এ আর মডেল হাই স্কুলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় ক্লাস করতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাতশ শিক্ষার্থীকে।
জানা গেছে, এ স্কুলে তিনটি কলেজের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে গত ৩ থেকে ৪ বছর ধরে। বছরের অন্তত: তিন থেকে চার মাস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন না কোন পরীক্ষা থাকেই।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, আগে যেখানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি থাকত সাতশ কিংবা তারও বেশি সেখানে বর্তমানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি থাকে দুই থেকে তিনশ জনের মত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন, সাম্প্রতিক পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে কুমিল্লা বোর্ডের ফল বিপর্যয়ের পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা অনেক দুশ্চিন্তায় রয়েছি। তার ওপর যদি স্কুলে নিয়মিত ক্লাস নেয়া না যায় তবে শিক্ষার্থীরা কী ভাবে পরীক্ষায় ভাল ফল করবে? আমরা তো তাদের পাঠদানে যেটুকু সময় ব্যয় করার কথা তা দিতে পারছি না।
পরীক্ষাগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী হয় না। কোন পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে আবার কোনটি দুপুর ২টা থেকে। ফলে ২ থেকে ৩ ঘন্টার মধ্যে তাড়াহুড়ো করে সব ক্লাস শেষ করতে হয়। আবার একটা ক্লাসে পূর্ণাঙ্গ সময় দেয়া যায় না। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ, নীলকান্ত ডিগ্রি কলেজ ও নাথের পেটুয়া ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ আর মডেল কলেজে। আগে এ পরীক্ষা নেয়া হতো নাঙ্গলকোট মহিলা মডেল কলেজে।
এ বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছেলে-মেয়েরা স্কুলে গিয়ে কি করবে ক্লাসই তো হয়না ঠিক মত। ক্লাসের ওপর থেকে তারা দিন দিন মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে। এভাবে চলতে থাকলে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা হুমকির মুখে পড়বে।
এ আর মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশের বাইরে অবস্থান করায় এ ব্যাপারে কথা হয় সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রব ভূঁইয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা তখন আপত্তি করেছিলাম। এখনও আমরা চেষ্টা করছি কেন্দ্রটি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়ার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোনাজার রশিদ বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টি পরীক্ষার ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নেই।’