জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বৃহস্পতিবার ফের বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এ সময় তারা পূর্বঘোষিত প্রতিবাদী কনসার্ট আয়োজন করেন।
গান ও কবিতা আবৃত্তিসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় কনসার্ট মুখর করে তুলেছেন তারা। চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এ কনসার্টে গান গাইছেন সিনা হাসান, আহমেদ হাসান সানী, তুহিন কান্তি দাস, নাইম মাহমুদ ও মূইজ মাহফুজ।
দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বুধবার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আবাসিক হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে তাকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে আন্দোলনরতরা।
আরও পড়ুন: জাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদী কনসার্ট
মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবন অবরোধ এবং সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে কার্যালয়ে যেতে পারছিলেন না উপাচার্য। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এক পর্যায়ে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পরে বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের নিদের্শ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে রাতেও হলে অবস্থান করেন এবং আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। পরে বুধবার সকাল থেকে ফের আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এরপর বুধবার দুপুরে আবাসিক হলের সব শিক্ষার্থীকে বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারের নির্দেশ না মানলেও বুধবারের নির্দেশনার পর হল ছেড়েন যান সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শিক্ষার্থীরা হলত্যাগের পরও বুধবার উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। পরে রাত ১০টার দিকে বৃহস্পতিবার আবারও অবস্থানের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তারা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাতে যখন ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন; তখন গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে অবস্থান এবং বাইরে থেকে এসে কোনও শিক্ষার্থী যেন মিছিল সমাবেশে অংশগ্রহণ বা ক্যাম্পাসের কোথাও অবস্থান না করেন সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ।