ঝুঁকিতে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা - Dainikshiksha

ঝুঁকিতে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা

মু. তৌহিদুল ইসলাম |

আঞ্চলিক একটি কথা আছে—মাগনা গরুর দাঁত নাই। এর অর্থ হলো ফ্রি জিনিসের মূল্য নেই। ফ্রি জিনিস অপব্যবহার হয় বেশি। পক্ষান্তরে মূল্য দিয়ে কেনা জিনিস আমরা খুব ভালোভাবে ব্যবহার করি বা যত্ন করি। বড়লোক বাবার ছেলে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা খরচ করে; এটা সে পারে কারণ এই টাকা তার পরিশ্রম করে  পেতে হয় না।

ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলায় একটি আবাসিক এলাকার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম, কিছু ছেলে কোনায়-কানায় বসে আছে, কারো কারো কাঁধে স্কুলব্যাগ। ভেবেছিলাম হয়তো আশপাশে কোচিং সেন্টার আছে। আমার সঙ্গে থাকা বন্ধুটি বলল, এই এলাকায় ওয়াইফাই সুবিধা আছে। এবার বুঝলাম ব্যাপারটা। যারা এখানে বসে মোবাইলফোন টিপাটিপি করছে তারা কি সবাই পড়ালেখা করছে বা পড়ালেখা সংশ্লিষ্ট কাজ করছে? আমার মনে হয় এটা কেউ বলবে না। কারণ ফ্রি ওয়াইফাই দিয়ে রাস্তার পাশে বসে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা পড়ালেখা করবে এটা কল্পনা ছাড়া আর কী হতে পারে! প্রশ্ন হচ্ছে—এই এলাকায় ফ্রি ওয়াইফাইয়ের সুবিধা দেওয়ার দরকার কী? যদি আমরা ধরি আশেপাশে কোনো গুরুত্বপূর্ণ (ঐ এলাকাটি আবাসিক ছিল) অফিস আছে তাহলে তো ব্রডব্যান্ড দিয়েও কাজ করা যেত। এভাবে ওয়াইফাই জোন করে দেওয়া মানে তো স্কুলপড়ুয়া ছেলেদের বিপদগামী করা! তাদের অবসর সময় নষ্ট করা।

একটা সময় মুরব্বি বা শিক্ষিতজনরা সাইবার ক্যাফের বিরুদ্ধে খুব বলতেন। মনে আছে বিভিন্ন জায়গায় আমরা টিচার বা সমাজের সচেতন মানুষের মুখ থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা শুনেছি। তাঁরা এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করতেন। স্কুল ড্রেস পরে কেউ যেন সাইবার ক্যাফেতে না যায় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে বলতেন। কিন্তু এখন আর এটা শোনা যায় না কারণ আমরা এটাকে নিয়ে এসেছি ঘরের ভেতর! এখন আর টাকা খরচ করে সাইবার ক্যাফেতে যাওয়া লাগে না। এখন ঘরের ভেতরে, রাস্তায়, ফাস্টফুড, হোটেল, শপিংমল ইত্যাদি সব জায়গাকেই আমরা সাইবার ক্যাফে বানিয়ে রেখেছি। এখন শিশু বা স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা অবসর সময় কাটায় ফাস্টফুডের দোকানে অথবা যেখানে ওয়াইফাই সুবিধা আছে সেখানে। যখন পড়ালেখা বা সৃষ্টিশীল কাজ করার কথা সে সময়টায় তারা মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকছে।

গত ১০ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত—ঢাকার ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’ গুরুত্বপূর্ণ স্থান আর অফিস আলাদা বিষয়। আমরা জানি, সরকারি সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিসে ইন্টারনেট সুবিধা আছে বা কাজের জন্যই থাকতে হবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ স্থান মানে আসলে কী? এটা যদি কোনো এলাকা, পার্ক বা দর্শনীয় স্থান হয় তাহলে প্রশ্ন—এর প্রয়োজন কতুটুকু? কেন গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে ওয়াইফাই জোন করা হবে? এতে কী লাভ? এটা শিক্ষার্থীদের অযথা সময় কাটানোর ও মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়! যদি শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য এটা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে অন্য ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু আমাদের নবীন প্রজন্মকে ভার্চুয়াল জগতের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করা দরকার। এ ব্যাপারে অভিভাবক ও প্রতিটি পরিবারকেই সচেতন হতে হবে।

ন্যাশনাল ল’কলেজ, ঢাকা

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068089962005615