একাধিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পাবনার সরকারি চাটমোহর কলেজের ২৬ শিক্ষক। শুধু তাই নয়, কলেজ সরকারি হওয়ার পর অবৈধভাবে আত্তীকরণের চেষ্টাও করছেন তারা। কলেজটির এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সাথে কে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তা উল্লেখ করে ২৬ শিক্ষকের নামের তালিকাও পাঠিয়েছেন তারা। একটি কপি দৈনিক শিক্ষার কাছেও পাঠিয়েছেন তারা। অভিযোগকারীদের দাবি, চাকরির ধারাবাহিকতা না থাকলেও কলেজ সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি হবার পর বিধি ভঙ্গ করে আত্তীকরণের চেষ্টা করছেন এ ২৬ শিক্ষক। তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোচিং সেন্টারে, কেউ গ্রামীণ ব্যাংকে, কেউ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবার কোউ ওষুধ বিক্রির দালাল বা বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত আগস্টে কলেজটি সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। অবৈধভাবে আত্তীকরণের চেষ্টাকারী ২৬ শিক্ষক ইতোমধ্যে অধ্যক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যয়নও পেয়েছেন।
জানা যায়, সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে যেসব শিক্ষক যোগদানের তারিখ থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন শুধু তারাই আত্তীকৃত হতে পারবেন। কিন্তু অন্য জায়গায় চাকরি করেও বিধিমালা না মেনে আত্তীকৃত হতে চাচ্ছেন এ ২৬ শিক্ষক।
এ বিষয়ে চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আত্তীকরণের জন্য কোনো শিক্ষককে প্রত্যয়ন করা হয়নি। ২৪ এপ্রিল থেকে ৫ মের মধ্যে আত্তীকরণের তালিকা জমা দেয়ার নির্ধারিত সময় ছিলো। পরে সময় বাড়ানো হয়। তবে দু’চার জন শিক্ষক অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার চাটমোহর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসিম কুমার দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, এরকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে এখনও আসেনি। কলেজটির পদ সৃজনের প্রস্তাব পাঠানোর কথা শিক্ষা অধিদপ্তরে। তখন বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে। বিধিমালা অনুসারে যারা যোগ্য হিসেবে গণ্য হবেন, তাদের পদ সৃজনের প্রস্তাব পাঠানো হবে।
তবে এ বিষয়ে কলেজের ইসলাম ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক মোসা. আম্বিয়া খাতুন লিখিতভাবে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আমার স্বামী সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে বাংলা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মে মৃত্যুবরণ করেন। সংসার পরিচালনার জন্য সে সময়ে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ‘কাজ নেই মজুরী নেই ভিত্তিতে’ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী দেয়া হয় এবং আমি চাকুরী করতে থাকি।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরবর্তীতে আমি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই এবং চাটমোহর কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ৩য় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। গত ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি যোগদান করি। চাটমোহর কলেজে যোগদানের পর থেকে আমি নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থাকি এবং সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ‘কাজ নেই মজুরী নেই’ ভিত্তিতে অতিরিক্ত সময়ে কাজ করছি।’
আম্বিয়া খাতুন আরও জানান, ‘চাটমোহর কলেজে যোগদানের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন আর্থিক সুবিধা বা বেতনভাতা গ্রহণ করিনি। সংসার পরিচালনার জন্য সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে আমি অতিরিক্ত সময় কাজ করছি।’
অনিয়মিত ২৬ শিক্ষকের তালিকা :