পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটির সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ৬ থেকে ১০ জনের টিম গঠন করে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আশপাশের জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে, কর্মচারী, স্কাউট, বিএনসিসি এবং শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে টিম গঠন করে সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে স্বচ্ছ পানি জমে থাকা সম্ভাব্য স্থানগুলো একদিন পরপর পরিষ্কার করতে হবে। এ ছাড়া রোস্টার ডিউটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ডেঙ্গু রোধে ঈদের ছুটিতে আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট প্রত্যেকদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অফিস খোলা রাখতে বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। বুধবার (৭ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পৃথক পরিপত্রে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১২-১৩ আগস্ট ছাড়া সব দিন স্কুল-কলেজের অফিস খোলা রাখতে হবে
জানা গেছে, চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকারি ছুটিতে ১২ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত থাকবেন না। তাই, ঈদের ছুটিতে খেলার মাঠ, ফুলের টব বা পানি জমে থাকে এমন কোনো পাত্রে এডিস মশার প্রজনন প্রক্রিয়া আরও বেগবান হতে পারে। এতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬দফা নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পৃথক পরিপত্র দুটিতে বলা হয়, ঈদুল আযহার ছুটিতে একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে, কর্মচারী, স্কাউট, বিএনসিসি এবং শিক্ষার্থীদের সমন্বয় ৬ থেকে ১০ জনের টিম গঠন করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এর আশেপাশের জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমে থাকতে পারে এমন সম্ভাব্য স্থান যেমন ফুলের টব, পানির ট্যাপের আশেপাশের জায়গা, পানির পাম্প, ফ্রিজ ও এসির পানি জমার ট্রে, বাথরুমের পানির বালতি ও পাত্র, আশেপাশে পড়ে থাকা আইসক্রিমের বক্স, পরিত্যক্ত চায়ের কাপ, ডবের খোসা, ইত্যাদি চিহ্নিত করে প্রতিদিন একদিন অন্তর পরিষ্কার করতে হবে।
এ ছাড়া ঈদের ছুটিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাথরুমের বদনা ও বালতি শূন্য করে উল্টিয়ে রাখতে হবে। টয়লেটের হাই কমোডে হারপিক খেলে ঢাকনা বন্ধ করে রাখতে হবে। বাথরুমে হারপিক ঢেলে বস্তা কিংবা অন্য কিছু দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে। কোন জায়গায় জমাটবদ্ধ পানি থাকলে লার্ভিসাইড স্প্রে করতে হবে বা জমাটবদ্ধ পানি নিষ্কাশন করতে হবে।
এছাড়া আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট ছাড়া প্রত্যেকদিন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা রাখতে হবে বলেও পরিপত্রে বলা হয়েছে। রোস্টার ডিউটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমে সিটি কর্পোরেশন পৌরসভা টিমে নিয়োজিত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ ঈদের ছুটিতে গেলে তাদের স্থানে উপযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ নিশ্চিত করতে সব স্কুল কলেজকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে আগামী ১০ থেকে ২৩ আগস্ট সব সরকারি-বেসরকারি কলেজ এবং ৮ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ১০দিন সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল খোলা থাকবে।