শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে হরেকরকম ভুল করেছেন নানাজাতের আমলা। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব ও উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা ছিলেন আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের মূল দায়িত্বে। তাদের সহযোগী হিসেবে ছিলেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ক্যাডার ও ব্যানবেইসের কর্মকর্তারা। সময় পেয়েছেন এক বছর। আর সহায়তা নিয়েছেন ডেডিকেটেড সফটওয়্যারের। তবুও রয়েছে কয়েকডজন ভুল। ভুলের রয়েছে রকমফের।
কিন্তু ভুলেভরা এমপিওর তালিকা সংশোধন করার চেয়ে ভুল হয়নি বা ভুলের দায় সফটওয়্যার, আবেদনকারী শিক্ষক ও এমপিও নীতিমালার ওপর চাপানো হচ্ছে। আবার তালিকা ঘোষণার পর যাচাই-বাছাই করায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন শিক্ষকরা। তাদের প্রশ্ন এক বছরের বেশি সময় ধরে তাহলে কী যাচাই-বাছই করলেন কর্মকর্তারা? তালিকাভুক্ত হয়েও তারা জানেন না কবে বেতন-ভাতা পাওয়া শুরু করবেন? এমপিওর দাবিতে শত শত প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী যখন আর্তনাদ করছেন ঠিক তখনই এমপিও পেয়েও তা বাতিল চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করছেন কেউ কেউ। আরও মজার বিষয় এমপিও বাতিলের এমন আবেদন দেখেও না দেখার ভান করছে মন্ত্রণালয়। তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে নানা তথ্যবিকৃতি ও ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষার ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে এমন চকমপ্রদ তথ্য। ধারাবহিকভাবে প্রকাশ করা হবে এমপিওভুক্তিতে হরেকরকম ভুলের তথ্য-উপাত্ত। আজ প্রথম পর্বে থাকছে টাঙ্গাইলের পাকুটিয়ার সৎসঙ্গ তপোবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাহিনী।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকুলচন্দ্র সুশিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে টাঙ্গাইলের ঘাটােইলের পাকুটিয়ায় সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওর তালিকাভুক্ত করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে সৎসঙ্গ বাংলাদেশ। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কতিপয় শিক্ষক এমপিওর আবেদন করেছেন, এমন তথ্য জানতে পেয়ে গত ২৫ জুন এমপিওভুক্ত না করার আবেদন জমা দেন সৎসঙ্গ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর জমা দেয়া হয় আবেদনটি। আবেদনের কপি দৈনিক শিক্ষার হাতে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করা হলে অনুকুলচন্দ্রের ভাবাদর্শ ও মানবসেবা ব্যাহত হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানান সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সভাপতি শ্রীযুক্ত বিহারী আদিত্য। কিন্তু ২৩ অক্টোবর ঘোষিত এমপিওর তালিকায় তপোবন বিদ্যালয়টির নামও আছে। তালিকা ঘোষণার তিনদিন পর তারা আবারও এমপিওভুক্ত বাতিল করে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তপোবনের এমপিও স্থগিত বা বাতিল হওয়ার কোনও আদেশ দৈনিক শিক্ষার নজরে পড়েনি।