নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল নুর ও লিনউড মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের একজন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ড. আব্দুস সামাদ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ব বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক ক্রাইস্টচার্চ শহরের হ্যাগলি পার্ক মুখী সড়ক দীন এভিনিউতে ‘আল নুর’ মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) ঢাকায় বসবাসরত ড. সামাদের ছেলে তোহান মোহাম্মদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘সর্বশেষ দুইদিন আগে বাবার সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছিল। শুক্রবার বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের খবরে জানতে পারি নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা দেড়টায় ক্রাইস্টচার্চ শহরের হ্যাগলি পার্ক মুখী সড়ক দীন এভিনিউতে ‘আল নুর’ ও ‘লিনউড’ মসজিদ দুইটিতে হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। এতে ২ বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এ খবর জেনেই আমি মায়ের সাথে যোগাযোগ করি। তখন মা জানান, ‘ঘটনার পরপরেই তিনি ছুটে গেছেন হাসপাতালে। কিন্তু পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের হাসপাতালে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলেছেন, গুরুতর আহতদের চিকিৎসা চলছে। এ মুহূর্তে কোনো কিছুই জানানো সম্ভব নয়। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো কিছুই প্রকাশ করবে না বলে জানিয়েছে।’
আব্দুস সামাদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আব্দুস সামাদ নাগেশ্বরী মধুরহাইল্যা গ্রামের জামাল উদ্দিন সরকারের বড় ছেলে। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষে সেখানেই কৃষিতত্ব বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পিএইচডি করেন নিউজিল্যান্ডে। পরবর্তীতে তিনি ওই বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ স্থায়ীভাবে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে বসবাস শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘আল নুর’ মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে কিছুদিন বসবাস করার পর তার বড় ছেলে তোহান মোহাম্মদ বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে অপর দুই ভাই তারেক, তানভির ও মা কেশোয়ারা সুলতানাকে নিয়ে বাবা ড. আব্দুস সামাদ সেখানেই থাকতেন।
এদিকে ড. আব্দুস সামাদ নিহতের সংবাদে পৌরসভার মধুরহাইল্যা গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতে শোকে কাতর হয়ে পড়ে স্বজনরা। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভাইয়ের শোকে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন ছোটভাই মতিয়ার রহমান। তারা কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না এ ঘটনা।