ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা মাথায় রেখে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা আগেভাগেই শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারণ এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন প্রয়োজন, তেমনি দরকার শিক্ষকদেরও।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষাপঞ্জিতে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা ১৮ ডিসেম্বর এবং কলেজের পরীক্ষা ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা আছে। কিন্তু প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের নির্বাচনীকাজে যুক্ত থাকতে হয়। সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের কথা ভেবে পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের কাজটি আগেভাগে শেষ করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে দ্রুত ফল ঘোষণা করার পরিকল্পনা যৌক্তিক বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গত বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকের বলেন, ‘যদি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হয় তাহলে বার্ষিক পরীক্ষাগুলো আগেভাগেই শেষ করা দরকার। সে ক্ষেত্রে বার্ষিক পরীক্ষার নির্ধারিত সূচিতে পরিবর্তন আনতে হতে পারে।’
কয়েক দিন আগে রাজধানীর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের মাসিক বৈঠকেও বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়টি আলোচনা হয়। সেখানেও এই পরীক্ষা আগেভাগেই শেষ করার পক্ষে মত দেন সবাই।
জানা যায়, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা শুরু হবে ১ নভেম্বর, শেষ হবে ১৫ নভেম্বর। আর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা ১৮ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ২৬ নভেম্বর।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু জিয়াউল হক বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। এখনো অনেক সময় আছে। যদি প্রয়োজন মনে হয়, তাহলে বার্ষিক পরীক্ষা আগেভাগে শেষ করার বিষয়ে বলা হবে।’
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিলের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বার্ষিক পরীক্ষা আমরা কিছুটা আগে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অক্টোবরের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে। এরপর নভেম্বরের ১৯ থেকে ২০ তারিখে আমরা বার্ষিক পরীক্ষা শুরু করব, যাতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেষ করতে পারি।’
ঢাকার মোহাম্মদপুরের কিশলয় উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচনী ডামাডোল নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে একটা শঙ্কা আছে। তাই আমার মনে হয় বার্ষিক পরীক্ষা শিক্ষাপঞ্জির হিসেবের আরো ১৫ দিন আগে শেষ করা উচিত। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যদি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় তাহলে আমরা প্রস্তুতি নিতে পারি। আগেভাগে সিলেবাস শেষ করতে পারি। কিন্তু শেষ সময়ে সিদ্ধান্ত এলে অনেক প্রতিষ্ঠানই সমস্যায় পড়তে পারে।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন হবে।