বেসরকারি স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তেত পৌঁছাতে পারেনি কমিটি। যদিও, বেশ কয়েকমাস ধরেই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে বিদ্যমান শর্তগুলো শিথিল করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। সভায় উপস্থিত ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে এমপিও নীতিমালা সংশোধন কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সকালে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভুষণ রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এমপিও নীতিমালায় নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির শর্তগুলো শিথিল করার দাবি জানাচ্ছিলেন ননএমপিও শিক্ষকরা। শর্তগুলো শিথিল করতে কমিটির ১ম সভায় কিছু প্রস্তাব রেখেছিলাম। সেগুলো নিয়েই আজকের সভায় আলোচনা হয়েছে।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানায়, এমপিওভুক্তির শর্ত হিসেবে বিদ্যামান নীতিমালায় অনুসারে শিক্ষার্থী সংখ্যা, পাসের হার ইত্যাদি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শর্ত হিসেবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার পরিবর্তনের যেসব প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তা মানতে চাননি কমিটির কর্মকর্তা সদস্যরা। যদিও তারা শিক্ষার্থী সংখ্যা ও পরীক্ষার্থী সংখ্যা কিছুটা কমানোর বিষয়ে কমিটিকে জানিয়েছেন। কিন্তু কর্মকর্তাদের সে প্রস্তাবে সন্তুষ্ট হতে পারোননি নন-এমপিও শিক্ষক প্রতিনিধিরা। তাই, কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে গঠিত কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এমপিওভুক্তির যোগ্যতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থী সংখ্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের নিয়োগের তারিখ থেকে বয়স গণনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতিতে অনুপাত প্রথা পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধিরা। এমপিওভুক্তির যোগ্যতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানের পাসের হার কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া এমপিওভুক্তি যোগ্যতা হিসেবে শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থী সংখ্যা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ভেদে কমানো প্রস্তাবনা করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থী সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানের মার্কিংয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া নীতিমালা সংশোধন করে বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় সভায়। নীতিমালা সংশোধন করে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে সভার কর্মকর্তারা মতৈক্যে পৌঁছেছেন।
গত ১২ নভেম্বর বেসরকারি স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক মাসের মধ্যে এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করতে বলা হয়েছে এ কমিটিকে। কমিটিতে ননএমপিও শিক্ষক নেতারাও সদস্য হিসেবে আছেন। স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংস্কারের সুপারিশ করবে এ কমিটি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদকে ১২ ডিসেম্বর গঠিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। এছাড়া কমিটিতে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, এনটিআরসিএ, ঢাকা বোর্ডের কর্মকর্তারা সদস্য হিসেবে আছেন। আর বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিবকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়।
এছাড়া নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এবং সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভূষণ রায়কেও কমিটির সদস্য করা হয়। তবে, কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।