নেপালের অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য চীনা ভাষা (ম্যান্ডারিন) শিক্ষা বাধ্যতামূলক করছে। যে সকল শিক্ষক চীনা ভাষা শিক্ষা দেবে, তাদের বেতন চীন সরকারই দেবে, এমন একটি অফারের লোভে নেপালের স্কুলগুলো এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
দি হিমালয়ান টাইমস (টিএইচটি)-কে এমন তথ্যই দিয়েছেন নিজেদের স্কুলে ম্যান্ডারিন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এমন অন্তত দশটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা।
এই স্কুলগুলো হলো- অ্যাপেক্স লাইফ, মাতৃভূমি, রাজশ্রী গুরুকুল, শূভতারা, রাতো বাঙালা, লার্নিং রিল্ম ইন্টারন্যাশনাল (এলআরআই), মালপি সিটি, পাঠশালা নেপাল-এর বাগডল ও বানেশ্বরের দুই শাখা এবং ইউনাইটেড স্কুল।
এছাড়াও পোখারা, ঢুলিখেলসহ দেশটির বিভিন্ন অংশের আরও অনেক স্কুলে ম্যান্ডারিন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলআরআই স্কুলের বোর্ড অব ট্রাস্টি, প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান শিব রাজ পান্ট।
দেশটির স্কুল পর্যায়ে অ্যাকাডেমিক কারিকুলাম নির্ধারণকারী সরকারি সংস্থা, কারিকুলাম উন্নয়ন সেন্টার-এর তথ্য কর্মকর্তা গনেশ প্রসাদ ভট্টরায় বলেন, “স্কুলগুলো বিদেশি ভাষা শিক্ষা দিতে পারে, কিন্তু তারা শিক্ষার্থীদের জন্য ওই সব ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “কেবল সরকারই কোনো বিষয়কে বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কোনো স্কুলের সেই অধিকার নেই।”
যেসব স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে টিএইচটি কথা বলেছে, তারাও সরকারি এই বিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল; তারপরও তারা বিধিটি এড়িয়ে গেছে। কারণ তাদেরকে ম্যান্ডারিন শিক্ষাদানকারী শিক্ষকদের বেতন দিতে হচ্ছে না।
ইউনাইটেড স্কুলের অধ্যক্ষ কুলদিপ নিউপেন বলেন, “দুই বছর আগে যখন চীনা দূতাবাস শিক্ষকদের বেতন বহনের ব্যাপারে রাজি হয়, তখন থেকেই আমরা ম্যান্ডারিন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছি।”
ম্যান্ডারিন শিক্ষাদানকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠমান্ডুর চীন দূতাবাস থেকে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অন্যান্য স্কুলও।
অ্যাপেক্স লাইফ স্কুলের অধ্যক্ষ, হরি দহল বলেন, “ম্যান্ডারিন শিক্ষকদেরকে আমরা শুধু আবাসন ও খাবার খরচের জন্য অর্থ দিয়ে থাকি।”
চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র জি গুয়াংজি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি টিএইচটি-কে দূতাবাসের শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে বলেন। তবে শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা টিএইচটির একাধিক ফোনকল ও মেসেজের কোনো উত্তর দেয়নি।
চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে ওঠার পর থেকে চীনা ভাষা শিক্ষা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ এতে অনেকের ভালো উপার্জন করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আর এ কারণেই অনেক নেপালী তাদের সন্তানদেরকে চীনা ভাষা শিক্ষা দিচ্ছেন।