প্যাকেজে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড, সহযোগিতায় শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

প্যাকেজে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড, সহযোগিতায় শিক্ষক

যশোর প্রতিনিধি |

সরকারি সব ধরনের নির্দেশনাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে অবৈধ নোট-গাইড বই বিক্রিতো হচ্ছেই। তার ওপর এবার প্যাকেজ সিস্টেম চালু করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো শিক্ষকদের সহযোগিতায় এই পদ্ধতি চালু করেছে। তাই চাইলেও কেউ এখন আর পর্যায়ক্রমে কোন নোট-গাইড কিনতে পারবে না। একই কোম্পানির সব বই একসঙ্গেই কিনতে হবে। 

অবস্থা এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যাতে অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তানদের পড়ালেখা দিনকেদিন কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ শিক্ষকদের পীড়াপিড়ির কারণে নোট-গাইড বই কিনতেই হচ্ছে। সরকারি কোন দফতরের কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় এই অবস্থা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে এই অবস্থার অবসান দাবি করেছেন।

বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারিভাবে নোট-গাইড বই পড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এটি কেবলমাত্র কাগুজে নির্দেশনা। কোথাও নোট-গাইড বই পড়ানো বন্ধ হয়নি। যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এই অবস্থা গরিব মানুষের সন্তানদের পড়ালেখায় বাধার সৃষ্টি করছে। অনুসন্ধানে তেমন চিত্রই ওঠে এসেছে।

সরকারিভাবে ন্যাশনাল টেক্সট বুক বোর্ডের নির্ধারিত বইয়ের বাইরে আর কোন বই পড়ানো যাবে না বলে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয় বছর চারেক আগে। কিন্তু সেই নির্দেশনা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। বাস্তবায়ন করা দরকার বলে সরকারি কোন কর্মকর্তারা প্রয়োজনবোধ করছেন না। এ কারণে নোট-গাইড কোম্পানিগুলো রীতিমতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে। যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবার সব সীমালংঘন করেছে।

কোম্পানিগুলো এ বছর নোট-গাইড বই বিক্রি করছে প্যাকেজ সিস্টেমে। বিগত দিনে শিক্ষকদের চাপাচাপির কারণে গরিব মানুষ তাদের সুবিধা মতো নোট-গাইড বই কিনতে পারতেন। যখন যতটুকু সামর্থ্য সেই অনুযায়ী তারা একটি দুটি করে বই কিনে সন্তানদের দিতেন। কিন্তু সেই পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দিগন্ত, নিউটন, অনুপম, আল-ফাতাহ, পাঞ্জেরী, জননী, দিশারী, সাগরিকাসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি তাদের নোট-গাইড বই প্যাকেজ সিস্টেমে বাজারে ছেড়েছে। প্রত্যেক ক্লাসের সব নোট কিংবা গাইড বই একসঙ্গে বান্ডিল করে (প্যাকেজ) বাজারে ছাড়া হয়েছে। কোম্পানির নির্দেশ অনুযায়ী, বিক্রেতারা ওই বান্ডিল খুলে আলাদা করে কোন বই বিক্রি করছেন না। কেবল নোট-গাইড বইয়ের ক্ষেত্রে যে এটি করা হয়েছে তা না। 

ব্যাকরণ বইয়ের ক্ষেত্রেও একই কাজ করা হয়েছে। এখন কেউ চাইলেও কেবলমাত্র বাংলা কিংবা ইংরেজি ব্যাকরণ বই কিনতে পারবেন না। কিনতে চাইলে দুটো একসঙ্গে নিতে হবে। সঙ্গে অবাঞ্ছিত সল্যুশনও বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হচ্ছে ক্রেতাকে। কেবলমাত্র ব্যাকরণ বই দুটি কিনতে সব মিলিয়ে সাতশ থেকে হাজার টাকা লেগে যাচ্ছে। 

অনুসন্ধানে সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন, এমএসটিপি স্কুল, বাদশাহ ফয়সাল ইসলামী ইনস্টিটিউট, আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, উপশহর বাদশাহ ফয়সাল ইনস্টিটিউট, চুড়ামনকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খয়েরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলেরহাট হাইস্কুল, পুলেরহাট গার্লস স্কুল, প্রিপারেটরি স্কুলসহ যশোরাঞ্চলের প্রায়সব স্কুলে হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে কোন না কোন কোম্পানির গাইড বই চালানো হচ্ছে। এসব স্কুল থেকে যে বুকলিস্ট দেয়া হচ্ছে তাতে স্কুলের কোন নাম থাকছে না। ফলে, অবলীলায় সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকরা অস্বীকার করতে পারছেন।

সরকার নোট-গাইড বই নিষিদ্ধ করলেও এটি বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কোন দফতরই। কেবলমাত্র চিঠি চালাচালির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। 

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞা, ঝিকরগাছার এএসএম জিল্লুর রশীদ, অভয়নগরের শহিদুল ইসলাম ও চৌগাছার আবুল কালাম রফিকুজ্জামান জানান,  বিভিন্ন স্কুলে গাইড বই পড়ানো বন্ধে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এর বাইরে তাদের কিছুই করার নেই বলে জানান। 

মণিরামপুরের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ‘বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তদারকি করা হয় নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই পড়ানো হচ্ছে কি না।’ বাঘারপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

যশোর জেলা শিক্ষা অফিসার এএসএম আবদুল খালেক বলেন,‘আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পত্রটি উপজেলায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না সে বিষয়ে তিনি বলেন,‘ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,‘পত্রটি দেখার পর খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036380290985107