প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। প্রথম স্ত্রীও ঢাকার একটি স্বনামধন্য কলেজের শিক্ষিকা। তার দায়ের করা মামলায় সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার সিএমএম আদালতের ২৭ নং কোর্টে উপস্থিত হতে হয়েছিল সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সেই শিক্ষককে। তিনি গত বছর শিক্ষা ভবনের একজন উপপরিচালক পদে বদলিভিত্তিক পদায়ন পেয়েছেন। হাজির হওয়া মামলার নম্বর ২৫৯/১৬।
শিক্ষা ভবনের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী দৈনিক শিক্ষাকে জানান, নারীঘটিত নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিভাগীয় শাস্তিপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা এর আগে কবি নজরুল সরকারি কলেজে থাকাকালে আরেকটি ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছিলেন। মামলাটি চলমান। এছাড়া নরসিংদী সরকারি কলেজে থাকাকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করেছিলো। বেতন কমিয়ে দিয়েছিলো। ভোলা সরকারি কলেজে থাকাকালেও তার বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা ভবনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রায়ই আদালতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে বউকে পিটিয়ে যখম করাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে বরখাস্ত ও গ্রেফতার করার দাবি তুলেছে সচেতন নাগরিকরা। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলছেন তারা।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর ঘরের দুই সন্তানের নামে সরকারি কোষাগার থেকে শিক্ষাভাতার টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে শাস্তি দিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দেয়ার মুচলেকা দিলেও তা এখনও দেয়নি বলে জানা গেছে। প্রথম স্ত্রীর ঘরের দুই সন্তানের একজন মেয়ে যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তিনিও এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। অপর সন্তান বিদেশে পড়াশোনা করছেন।
সারাদেশে যখন নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার সাধারণ মানুষ। সরকার যখন ধর্ষনের শাস্তি মৃত্যূদণ্ড করে আইন সংশোধন করেছে ঠিক তখন এমন নারী নির্যাতনকারী সরকারি কলেজের শিক্ষক কিভাবে শিক্ষা ভবনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকে তা নিয়ে নারী অধিকার নেত্রীরা শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবেন।
শিক্ষা ভবনের কর্মকর্তারা জানান, এই উপপরিচালকের গুরু শিক্ষা ক্যাডারের যাবতীয় অস্থিরাত সৃষ্টির নেপথ্যে এবং মাতাল অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে সামনের রাস্তার ওপর। কয়েকবছর আগের ওই ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ব্যাচেলর ওই গুরুর বিরুদ্ধে নারীঘটিত নানা অভিযোগ রয়েছে। বকশিবাজারের একটি শিক্ষা অফিসের একটি বাসায় অবৈধভাবে বসবাস করছেন তিনি। শিক্ষা প্রশাসনের যাবতীয় বিতর্ক ও অঘটনের নেপথ্যে এই গুরু। অবিলম্বে এই গুরু-শিষ্যকে শিক্ষা ভবন থেকে বিতাড়িত করার দাবি উঠেছে।