নীলফামারীর ডোমারে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে বিভাগের নাম ভুল আসায় পরীক্ষা দিতে না পারার শঙ্কায় এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাকডোকরা গ্রামের দোলাপাড়ায় নিজের শোবার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এ ঘটনায় নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহত তৃষ্ণা রানী (১৫) মাহিগঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয়ের চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও বাকডোকরা এলাকার দুলাল রায়ের মেয়ে।
জানা যায়, আগামীকাল সোমবার ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। গত ২৮ জানুয়ারি মাহিগঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে সব শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র সংগ্রহ করলেও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত তৃষ্ণা রানী আজ সোমবার বিদায় অনুষ্ঠানের পর প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে। এতে সে বাণিজ্য বিভাগের জায়গায় মানবিক বিভাগ লেখা আছে দেখতে পায়। পরে সে স্কুল থেকে ফিরে পরীক্ষা না দিতে পারার শঙ্কায় অভিমানে সকলের অগোচরে নিজের ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
তৃঞ্চা রানীর কাকী অলিনদিতা রানী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগ থেকে মাহিগঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তৃষ্ণার। তবে প্রবেশপত্রে বাণিজ্য বিভাগের জায়গায় মানবিক বিভাগ হওয়ায় সে স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠান থেকে এসে সকলের অগোচরে তার নিজের শোবার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।’
মাহিগঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘গত ২৮ তারিখ বিকাল বেলা প্রবেশপত্র বিদ্যালয়ে আসে। সকল পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র নিয়ে গেলেও তৃঞ্চা রানী প্রবেশপত্র নিতে আসেনি। রোববার বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান ছিল। সে অনুষ্ঠান শেষে প্রবেশপত্র গ্রহণ করে জানায় তার বিভাগ ভুল এসেছে। আমি তাকে শান্তনা দিয়ে বলি, তুমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করো আমরা বিভাগ পরিবর্তনের চেষ্টা করবো। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পরেই তার মৃত্যুর খবর আসে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাকেরিনা বেগম পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর একদিন আগে স্কুলে কীভাবে বিদায় অনুষ্ঠান হয়। প্রবেশপত্রটি আগে দিলে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি ঘটতো না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।’