রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের পরিচালক মো. ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন এবং ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার বেনজীর আহমেদকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
নাহিদ বলেন, কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরপর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনি সচিবালয় থেকে রওনা হন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় তিন সদস্যের পৃথক কমিটি গঠন করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস।
তিনি বলেন, সোমবার রাতেই আমরা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছি। সেখানে কমিটি গঠন করার বিষয়টি সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের অপমান সইতে না পেরে ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা
কমিটির সদস্যরা হলেন শিক্ষক আতাউর রহমান, খুরশিদ জাহান ও ফেরদৌসী বেগম।
অন্যদিকে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিষয়টি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে এনেছি। আদালত বিষয়টিকে হৃদয়বিদারক ঘটনা বলে আবেদন আকারে বুধবার (৫ ডিসেম্বর) রিট করতে বলেছেন। রিটে বিষয়টি তদন্ত করার আবেদন জানানো হবে।
এর আগে সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর শান্তিনগরে গলায় ফাঁস দিয়ে অরিত্রি অধিকারী নামে ভিকারুননিসার ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেন। অরিত্রি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (২ ডিসেম্বর) পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, তার মেয়ে পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিত্রি বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দিলীপ অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করেছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, তাকে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হকে ন। এ মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে।