একশ’ টাকা চুরির অপবাদে মুখে গামছা বেঁধে তৃতীয় জামাত (তৃতীয় শ্রেণি) এর ছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়া (৮) কে বেত্রাঘাতের ঘটনায় দুই শিক্ষক আটকের পরে এবার বন্ধ হয়ে গেলো গৌরনদী সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা কওমি মাদরাসাটি।
রোববার দুপুরের দিকে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম এর মা সহ বেশ কয়েকজন মাদরাসায় এসে আবাসিক ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে তড়িঘরি করে পালাবার সময় পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলামের মা ও মাদরাসার সুপার’র শাশুরী জাহিদা বেগম, নিকট আত্মীয় মাঈনুল ইসলাম, দারোয়ান ইমরান হোসেন, আয়া রাজিয়া বেগম ও শিউলী বেগম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরনদী থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, শিশু কণ্যাকে চুরির অপবাধ দিয়ে বেত্রাঘাত এবং নির্যাতনের অভিযোগে গত শনিবার তার মা রেনু বেগম বাদী হয়ে মাদরাসা সুপার (বড় খালামনি নামে পরিচিত) খাদিজা বেগম সহ কয়েকজন শিক্ষককে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওইদিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী, বাংলা খালামনি হাফিজা আক্তার ও আরবী খালামনি ফাতেমা আক্তার লিজাকে গ্রেফতার করেন।
এদিকে মামলার বাদী গৌরনদীর পশ্চিম শাওড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রসাবসী মো. কামাল হোসেন বেপারীর স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, রোববার দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আবাসিক ছাত্রীদের মাদরাসা থেকে বের করে দিয়ে প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে একশ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে গৌরনদী উপজেলা সদরে অবস্থিত খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসার আবাসিক হলের ছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়ার মুখে গামছা বেঁধে মেঝেতে ফেলে সুপার খাদিজা বেগম সহ তিন মহিলা শিক্ষক বেত্রাঘাত করে।
এতে তার সমস্ত শরীর জুড়ে ১৬০টি বেত্রাঘাতের খ্যত স্থান ফুলে উঠেছে। তাছাড়া শিশুটির আঙ্গুলে সুঁই ফুটায় পাষন্ড শিক্ষকরা। খবর পেয়ে শুক্রবার শিশুর মা রেনু বেগম মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। এই ঘটনায় শনিবার শিশুর মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।