যৌন হয়রানির হাতিয়ার প্রধান শিক্ষকের পরিবারতন্ত্র - দৈনিকশিক্ষা

তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়যৌন হয়রানির হাতিয়ার প্রধান শিক্ষকের পরিবারতন্ত্র

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি |

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ (৫৬)। এই বিদ্যালয়ের করণিক সেলিনা আক্তার তাঁর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। খণ্ডকালীন শিক্ষক সুমন আহমদ ভাগ্নে। আরেক শিক্ষক মোস্তাকিম আহমদ আত্মীয়। শুধু তা-ই নয়, চাচা ও মামাকে সভাপতি রেখে ব্যবস্থাপনা কমিটি বানিয়ে গত ১০ বছর প্রতিষ্ঠান চালিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন নোমান। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রধান শিক্ষক হন। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান থাকার সুবাধে বিদ্যালয়ে গড়ে তুলেছেন পারিবারিক একটি চক্র। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। তবে এক শিক্ষিকাকে সম্প্রতি কুপ্রস্তাব দিলে প্রতিবাদী ওই নারীর কারণে তদন্তের মুখে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই বিদ্যালয়ে অভিযোগ তদন্তে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ।

শিক্ষক নোমানের যৌন হয়রানির ঘটনায় ২৫ জুলাই মামলা হয়। এর পর থেকে এলাকাছাড়া তিনি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও তাঁর বাহিনী মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয় ওই শিক্ষিকাকে। এ নিয়ে ৩০ জুলাই মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন ওই শিক্ষিকা।

সাতক্ষীরা সদরের বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন ক্লাস নিয়ে প্রধান শিক্ষকের খারাপ আচরণে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের খারাপ আচরণের কারণে ভয়ে আমি বিপদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি অনেক প্রভাবশালী। বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় দেখেছি তিনি এক শিক্ষিকার প্রতি কুদৃষ্টি দিয়ে তাকাতেন।’

স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি সাদাতুর রহমান ছিলেন তাঁর চাচা। এর পরের কমিটির সভাপতি মুটুক আহমদ তাঁর মামা।

একাধিক শিক্ষিকা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক সুযোগ পেলেই শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি এক মিনিট পরে কথা বলবেন বলে কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল কলেও ধরেননি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তদন্তে সত্যতার প্রমাণ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

কুলাউড়া থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘আসামিকে ধরতে কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছি। শুনেছি আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।’

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের বিভিন্ন অনিয়ম ও সহকারী শিক্ষিকাকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070700645446777