কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অর্জিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক শিক্ষকের শিক্ষা সনদগুলো যাচাই করে সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, এখন থেকে কোন শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন না। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষকদের সনদগুলো যাচাই করে অন্তর্ভুক্ত করার চিঠি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী সিনিয়র সচিব মো: আকরাম আল হোসেন লক্ষাধিক শিক্ষকের অবৈধ সনদগুলো যাচাইসাপেক্ষে বৈধ করার সিদ্ধান্ত দিলেন। আগামী ১ লা নভেম্বর তিনি অবসরে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাধারণত চাকরিতে যোগদানের সময় যেসব সার্টিফিকেট জমা দেন তা সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়া নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা প্রশিক্ষণ অর্জন করলে তাও সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু অনেক শিক্ষক অধ্যয়নরত থাকা অবস্থাতেই চাকরিতে যোগদান করেছেন। এছাড়া অনেক শিক্ষক নৈশকালীন বা খণ্ডকালীন কোর্স সম্পন্ন করেছেন কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেননি । স্কুল থেকে ছুটি না নিয়ে নিম্নমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ কেউ অনার্স-মাস্টার্সের সনদ নিয়েছেন।
উপসচিব নাজমা শেখ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া যদি কোন শিক্ষক শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা অর্জন করে তা সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিক্ষগত যোগ্যতার সনদগুলো যাচাই করে সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে বলা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে। তবে, এখন থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে বলেও বলা হয়েছে চিঠিতে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও সরকারি বিধান মেনে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি ও পরীক্ষায় অংশ নেননি এক লাখের বেশি প্রাথমিক শিক্ষক। অনুমতি না নেয়ায় তাদের উচ্চশিক্ষার সনদগুলো অবৈধভাবে অর্জিত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেসব সার্ভিসবুকে যুক্ত করে পদোন্নতিসহ নানা আর্থিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন এসব শিক্ষক। এসব সনদই যাচাই করে সার্ভিসবুকে অর্ন্তভুক্ত করার নির্দেশনা জারি হল।
যদিও এসব শিক্ষকের সনদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সরকারি চাকরি নেয়ার পর সার্বক্ষণিক চাকরি করে কিভাবে এই শিক্ষকরা চার বছর মেয়াদী অনার্স, দুই-তিন বছর মেয়াদী ডিগ্রি পাস কোর্স ও মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি, নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা দিলেন? এইসব প্রশ্নের সুরাহা না করেই তাদের সনদ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দিল গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপদের রদবদলে এমন অনেক সিদ্ধান্তই বাতিল হওয়ার নজির আছে।
জানা গেছে, আগামী ১ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব পদ থেকে অবসরে যাচ্ছেন মো: আকরাম আল হোসেন। ইতোমধ্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গোলাম মো: হাসিবুল আলমকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।