দুর্গম পাহাড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে রাঙাবী চাকমা নামে এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। দুর্গম লেমুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবারই প্রথম জিপিএ-৫ পেল বলে জানান স্থানীয় শিক্ষক বিজয় মঙ্গল চাকমা। রাঙাবীর এমন সাফল্যে উচ্ছ্বাসিত লেমুছড়ি গ্রামের মানুষ ও তার পরিবার।
উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের শেষ সীমানায় লেমুছড়ি গ্রাম। মোটরসাইকেল ও নৌকায় আর হেঁটে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ মাড়িয়ে যেতে হয় রাঙাবীর বাড়িতে। ছোট্ট একটা ঘরে চার ছেলে মেয়ে নিয়ে দিনমজুর বড় বিকাশ চাকমার বসবাস। বড় বিকাশ ও বাসনা চাকমা দম্পতির পাঁচ ছেলে মেয়ের মধ্যে রাঙাবী চতুর্থ। বছর খানেক আগে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। রাঙাবীর বড় ভাই ও বোনদের ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেই থামতে হয়েছে। আশেপাশে হাই স্কুল নেই। পরিবারের সামর্থ্য নেই দূরের স্কুলে পড়ানোর। তবে রাঙাবীর ভালো ফলাফলের কারণে কষ্ট করে হলেও মেয়েকে পড়াতে চান ওই দম্পতি।
রাঙাবী দুই হাত ও পায়ের আটটা আঙুল কম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ডান হাতের দুটি আঙুল ছাড়াই লেখার অভ্যাস করেছে সে। হাতের লেখাও সুন্দর। রাঙাবীর ইচ্ছা, পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অভিলাস চাকমা জানান, রাঙাবী প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে যে টাকা পায় তা ওর পড়ালেখায় কাজে লাগবে। রাঙাবীর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে তাকে সবার সহযোগিতা করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
রাঙাবীর ভালো ফলাফল বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক সুনীল বরণ চাকমা। এবারই প্রথম জিপিএ-৫ এবং শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে এ বিদ্যালয় থেকে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।