চোখের জ্যোতি ধরে রাখার জন্য দরকার ভিটামিন এ। আর ভিটামিন বি খাদ্যকে শক্তিতে রুপান্তরে সহায়তা করে। এমন আরো অনেক ভিটামিন ও খনিজ পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো না হলেই নয়। সুতরাং আমাদের খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে এমনভাবে যাতে আমাদের দেহ এর জন্য প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও খনিজ পুষ্টি উপাদান পায়। এখানে এমন ২২টি ভিটামিন ও খনিজ পুষ্টি উপাদানের তালিকা দেওয়া হলো যেগুলো আমাদের দেহের সচল থাকার জন্য আবশ্যক।
১. ভিটামিন এ
চোখের জ্যোতি এবং ত্বকের সুস্থতার জন্য আবশ্যক। আলু, গাজর এবং আম ভিটামিন এ-র সবচেয়ে ভালো উৎস।
২. ভিটামিন বি
এটি খাদ্যকে শক্তিতে রপান্তর করে। তরমুজ এবং লাউজাতীয় তরকারিতে সবেচেয়ে বেশি পাওয়া এই ভিটামিন।
৩. ভিটামিন সি
এটি দেহে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি করে। কমলা, সাইট্রাস জাতীয় ফলসমূহ এবং ব্রোকোলিতে সবচেয়ে বেশি থাকে ভিটামিন সি।
৪. ভিটামিন ডি
এটি দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করা এবং দেহে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-র সবচেয়ে ভালো উৎস। তবে মাশরুম, সয়া দুধ এবং চর্বিযুক্ত মাছও ভিটামিন ডি-র ভালো উৎস।
৫. ভিটামিন ই
দেহের জন্য সেরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এটি। সবধরনের সবুজ পাতাবহুল শাক ও সবজিতে ভিটামিন ই থাকে প্রচুর পরিমাণে।
৬. ভিটামিন এফ
এতে আছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। যা ক্ষত সারিয়ে তুলতে এবং হজম প্রক্রিয়ার জন্য জরুরি। তেল, বাদাম এবং মাছ এই ভিটামিনের সবচেয়ে ভালো উৎস।
৭. ক্যালসিয়াম
হাড়, হরমোন নিঃসরণ এবং দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমের কার্যকারিতার জন্য এটি জরুরি। দুধ, ব্রোকোলি, রাগি এবং স্পিনাক এর সবচেয়ে ভালো উৎস।
৮. পটাশিয়াম
এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দেহের তরলগুলোর ভারসাম্য রক্ষা করে। কলাই বা শুঁটি জাতীয় শস্য এর সবচেয়ে ভালো উৎস।
৯. ম্যাগনেশিয়াম
দেহে যেসব রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয় তার জন্য দরকার এটি। এছাড়া হাড় মজবুত করার জন্যও জরুরি এটি। স্পিনাক এবং পাম্পকিন বীজ দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাগনেশিয়াম সরবরাহ করে।
১০. আয়রন
আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। স্পিনাক, বাদাম এবং চিয়া বীজ আয়রনের সবচেয়ে ভালো উৎস।
১১. ভিটামিন বি১
স্বাস্থ্যকর চুল এবং মস্তিষ্কের জন্য খুবই দরকারি এটি। সয়া দুধ ভিটামিন বি-র একটি মহা উৎস।
১২. ভিটামিন বি৬ (পাইরোডক্সিন)
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এটি। কলা এবং তরমুজে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায়।
১৩. ভিটামিন বি১২ (কোবালামিন)
এটি নতুন কোষ উৎপাদন এবং অ্যামাইনো এসিড ভাঙতে সহায়তা করে। ডিম এবং মাছ ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ।
১৪. রিবোফ্লাবিন
মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ চমৎকার কাজ করে এটি। এটি ভিটামিন বি২ নামেও পরিচিত। ডিম, মাংস, কলাইজাতীয় শস্য এবং কলাতে পাওয়া যায় এটি।
১৫. বায়োটিন
গ্লুকোজ সংশ্লেষণে সহায়তা করে এটি। সব ধরনের পূর্ণ শস্যজাতীয় খাদ্যে পাওয়া যায় বায়োটিন।
১৬. চোলিন
এটি অ্যাসেটাইলচোলিন নিঃসরণে সহায়তা করে। যা মস্তিষ্কের তৎপরতার জন্য সহায়ক। চিনা বাদাম এর সবচেয়ে ভালো উৎস।
১৭. ফলিক এসিড
গর্ভধারণ অবস্থায় সব নারীর জন্যই এটি জরুরি। এটি শিশুকে জন্মগত ক্রটিতে থেকে মুক্ত রাখে। টমেটো, কমলা জুস, ছোলা এবং ডিমে সবচেয়ে বেশি থাকে এটি।
১৮. ভিটামিন কে
হাড়ভাঙ্গা প্রতিরোধ করে। বিশেষ করে পশ্চাদ্দেশের হাড়। বাধাকপি এবং ব্রোকোলিতে পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি।
১৯. কপার
এটি রক্তের লাল কোষ তৈরিতে সহায়তা করে। আলু বোখারা, খেজুর এবং শেল মাছ এর বড় উৎস।
২০. ক্লোরাইড
কার্যকর হজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এটি। সামুদ্রিক লবণ, সেলারি, রাই, টমোটো এবং লেটুসে পাওয়া যায় এটি।
২১. ফসফরাস
আমাদের দেহের কোষগুলোতে পুষ্টি উপাদানের আসা-যাওয়া বা চলাচলে সহায়ক এটি। এটি ডিএনএন-রও একটি অংশ। সবুজ মটরশুটি ফসফরাসের সবচেয়ে ভালো উৎস।
২২. জিঙ্ক
স্বাদ এবং গন্ধ সহ আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোকে সচল রাখার জন্য এবং ক্ষত সারাতে এটি জরুরি। এটি পাওয়া যায় সামুদ্রিক খাদ্য, শিম, বাদাম এবং মুরগীর মাংসে।
আপনি যদি দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এই সবকটি ভিটামিন ও খনিজ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিতভাবে খেতে পারেন তাহলে আপনি ইনফেকশন ও রোগ থেকে মুক্ত পারবেন।
সূত্র: এনডিটিভি