শিক্ষার্থীসহ ১০ হাজার বাংলাদেশিকে তাড়িয়ে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীসহ ১০ হাজার বাংলাদেশিকে তাড়িয়ে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন কোনো রকম রাখঢাক না করেই ঘোষণা করেন, দুূ:খিত, আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, কঠিন এই সময়ে আমরা আমাদের নাগরিকদের নিয়ে নজর দিতে চাই। কোভিড-১৯ এর এই দুর্যোগে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছাড়া আর কারো দায়িত্ব নিতে পারছে না সরকার। ফলে এ দেশে যারা অস্থায়ী ভিসা নিয়ে আছেন এবং খরচ নির্বাহের সামর্থ্য নেই, তাঁদের বিকল্প হচ্ছে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। বিদেশি শিক্ষার্থী যারা চিকিতসা বিজ্ঞান কিংবা নার্সিং পড়ছেন না তাদেরকেও আমরা উতসাহিত করছি ফিরে যেতে। 

স্কট মরিসন এ-ও বলেন, জন্ম যার যে দেশেই হোক, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলে তার সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের।

সরকারকে অবশ্যই নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের সর্বাধিক অর্থনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান, বাংলাদেশ মিশন এবং লোকাল কমিউনিটির তথ্য মতে,  দ্বীপ রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে  ৫ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ লাখ অস্থায়ী ভিসাধারী রয়েছেন। ওই দেশে বাংলাদেশ নামক আজকের স্বাধীন ভূখন্ডের মানুষজনের বসবাসের ইতিহাস শত বছরের।

২০১১ সালের সর্বশেষ গণ-জরীপে অস্ট্রেলিয়ায় ৫২ হাজার ৯২০ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্থায়ীভাবে বাসবাসের তথ্য রেকর্ডভুক্ত হয়। তবে এই ক'বছরে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশিদের বাস প্রধানত নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া প্রদেশে, মেলবোর্ন ও সিডনিতে। তবে বিশাল ওই দেশে অন্য এলাকাতেও এখন বাংলাদশিদের সংখ্যা অপ্রতুল নয়। দেশটিতে এখন তৃতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশিদের অবস্থান বেশ পোক্ত। তবে সেখানে অবস্থারত বাংলাদেশিদের প্রায় এক দশমাংশ রয়েছেন পড়াশোনা এবং স্বল্পকালীন চাকুরি নিয়ে। প্রকৃত হিসাব কারও কাছেই নেই এমন দাবি করে ক্যানবেরার বাংলাদেশ হাই কমিশন এবং নব প্রতিষ্ঠিত সিডনি কনস্যুলেটের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের শুক্রবারের ঘোষণায় এটা স্পষ্ট যে অস্ট্রেলিয়া সরকার চাইছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যাদের সাপোর্ট নাই এবং যারা হলিডে ওয়ার্কার (এখন বেকার) তারা ফিরে যাক।

বিশাল অস্ট্রেলিয়াজুড়ে এমন বাংলাদেশির সংখ্যা কত হতে পারে? সেই প্রশ্নে বাংলাদেশি কূটনীতিকরা ধারণা দেন- এটি ১০ হাজারের মতো হবে। তারা বলছেন - স্টুডেন্ট ৫ থেকে ৬ হাজার, হলিডে ওয়ার্কার বা পার্টটাইমার ২-৩ হাজার এবং পিআর বা নাগরিকত্বের আবেদন ঝুলে থাকা বাংলাদেশি দেড় থেকে দুই হাজার।

বাংলাদেশি ওই কূটনীতিক বলেন কর্মনির্ভর বিদেশি শিক্ষার্থী যাদের যথেষ্ট সঞ্চয় নেই তারা যে এরইমধ্যে সমস্যায় নিমজ্জিত সেই আভাস পাওয়া যায। এটি আরও স্পষ্ট হয় সিডনির বাংলাদেশ কমিউনিটিতে কথা বলে। জানা যায়, সেখানে ইতোমধ্যে করোনার পরিস্থিতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। কাজ কর্মহীন বাংলাদেশিদের জন্য কমিউনিটি অবশ্য এগিয়ে এসেছে। সিডনীর নার্গিস কাবাবে রান্না আর খুশবু হোটেলে প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ শ বাংলাদেশি স্টুডেন্টের জন্য ফ্রি লাঞ্চ এবং ডিনারের আয়োজন চলছে। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়া সরকার মোটামুটি ৩ মাসের একটি সেমি লকডাউনে গেছে। পুরো সময়ই সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কর্মহীন বাংলাদেশি এবং কর্মনির্ভর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের লাঞ্চ-ডিনারের এ আয়োজন থাকছে। এছাড়া ওয়েল এনাফ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা নীরবে তাদের অন্যান্য সহযোগিতাও করছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠেছে- এভাবে কতদিন?

অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি বিদেশিদের খেদাও এর ঘোষণা বাস্তবায়নে আরও কঠোর হয় তাহলে কয়েক হাজার বাংলাদেশিকে ফিরতেই হবে। 

তবে নার্সিং বিষয়ে পড়ুয়াদের এখন কদর বাড়বে। কারণ কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া সরকার সব প্রাইভেট হাসপাতাল এবং পাঁচতারকা অনেক হোটেলকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসেছে। অস্থায়ী ওই সব মেডিকেলে প্রচুর চিকিৎসক ও নার্স প্রয়োজন।

প্রতিবাদ:

তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দ্য কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অস্ট্রেলিয়া নামের সংগঠন। তারা বলছে, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরাট ভূমিকা আছে। একজন ছাত্র গড়ে ৪০ হাজার ডলার টিউশন ফি দিয়ে থাকেন। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার ৩২ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী স্কট বর্ণবাদী বক্তব্য রেখেছেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন। এখন অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ সীমান্ত বন্ধ। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ লকডাউনে। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই ঘোষণা অমানবিক।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033538341522217