রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র ভর্তি থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ, প্রশ্ন প্রণয়ন ও খাতা মূল্যায়ন, ক্যারিকুলাম প্রণয়ন ও টিউশন ফি নির্ধাণসহ সব বিষয়ে নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। যারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন তাদের সব নিয়মনীতি মেনেই চালাতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা উচ্চশিক্ষার প্রসার চাই। তবে সার্টিফিকেটসর্বস্ব উচ্চশিক্ষা চাই না। তাই প্রয়োজনে ইউজিসি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং উচ্চশিক্ষার গুণগুত মান নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসারে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখলেও সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় বা সব উদ্যোক্তা নিয়মনীতি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন না। বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই বদ্ধ বাণিজ্যিক ভবনে পরিচালিত হয় যা উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার পথে বড় অন্তরায়।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ডিভোর্সের হার অনেক বেড়ে গেছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। কেননা আমাদের কালচারে এমনটা হবার কথা নয়। সামাজিক অবক্ষয় দূর করার জন্য ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ আসলেই ভালো হবে না।
ছাত্রদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, কখনও মিথ্যা ও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবে না। সর্বদা বিবেককে জাগ্রত রাখবে। মনে রাখবে, ব্যক্তির দুস্কর্মের ফল ব্যক্তি একা ভোগ করে না বরং সমগ্র জাতিকে তা ভোগ করতে হয়। আমাদের নবীন গ্র্যাজুয়েটরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রিয় মাতৃভূমির কল্যাণে অবদান রাখবে- এটাই প্রত্যাশা।
সমাবর্তনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ৭০৬ জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েটসহ ১৬২০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি সনদ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।