১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনাকে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ মনে করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। আজ (২১ আগস্ট) শিক্ষা ভবন সংলগ্ন সিরডাপ মিলনায়তনে একটি গোল টেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে কথা বলার সময় তিনি ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের নির্মম খুন সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে মাদরাসা টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. গোলাম আজম আযাদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুল হকও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও শিক্ষা অধিদপ্তর ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা ক্যাডারের কোনও কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরের প্রতিবাদ করেননি। তবে, গোলটেবিলের সঞ্চালক ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের প্রতিষ্ঠাতা রোকেয়া কবীর ড. জাহাঙ্গীরের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন। গোল টেবিল ছেড়ে চলে যেতে চাইলে রোকেয়া কবির জাহাঙ্গীরকে দাঁড় করিয়ে রেখে ‘তীব্র প্রতিবাদ করেন।’ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউনাইটেড ফর বডি রাইটস বাংলাদেশে এ্যালায়েন্স (ইউবিআর) আয়োজিত দিনব্যাপী গোলটেবিলের শিরোনাম ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার”। জেন্ডার সংবেদনশীল শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। পাঠ্যপুস্তকে যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে অধ্যায় থাকলেও তা পড়ানো হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা।
আরও পড়ুন: মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রধান ড. গোলাম আজম
দৈনিক শিক্ষার এক প্রশ্নের জবাবে ২২ আগস্ট ভোরে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ওটা স্লিপ অব টাং। আমি আসলে ১৫ ও ২১ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করতে চেয়েছিলাম।’
পরিচালক ড. জাহাঙ্গীরের মূল পদ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি যথাক্রমে এই অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও পরিচালক পদে আছেন। তার নিজ জেলা কুমিল্লা।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। প্রচলিত আইনে খুনিদের বিচার হয়। অধিকাংশ খুনির ফাঁসি হয়। দু’একজন খুনি এখনও বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন।
অপরদিকে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতেই ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়।
এদিকে, তার এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিটিএ সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. কাওছার আলী শেখ।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ : কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ
আরও পড়ুন: শিক্ষা ভবনের পরিচালক জাহাঙ্গীরের নিন্দায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি