শিক্ষা ভবনে কে কত দিন কর্মরত: পর্ব-১ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা ভবনে কে কত দিন কর্মরত: পর্ব-১

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কৃষিবিজ্ঞানের সহকারি অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল কাশেম। তাঁর মূল পরিচয় তিনি একজন বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক। বিধান অনুযায়ী তিন বছরের বেশি এক কর্মস্থলে থাকতে পারেন না তিনি। তবে,  শিক্ষা প্রশাসনের বহুল আলোচিত ‘জালালী’ হাতের স্পর্শে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আইন কর্মকর্তা হিসেবে তবিয়তে বহাল আছেন এই কাশেম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তরে জটবাধা মামলার সংখ্যা প্রায় আট হাজার। আইনের জটিল বিষয় ও ইংরেজিতে লেখা উচ্চ আদালতের রায় অথবা নোটিশ কিংবা রুল নিশির জবাব লিখতে ভালো লাগে না এখানে নিযুক্ত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের! তাই কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে ব্যরিস্টার হায়ার করতে হয়েছে অধিদপ্তরকে।

অধিদপ্তরের আইন শাখার এই যখন হাল, ঠিক তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়াধীন একটি বেসরকারি কলেজ থেকে আইনে তৃতীয় বিভাগের সনদধারী সহকারী অধ্যাপক আল আমিনও আইন কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন বাগান। পদায়নের ফাইলে আল আমিনকে ‘আইন বেত্তার’ তকমা দেয়া হয়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাস থেকে অদ্যাবধি আইন শাখায় কর্মরত তিনি। এখানেও ‘জালালী’ হাতের ছোঁয়া! তবে, শত শত প্রশ্নের মুখে ‘জালালী’ জবানে নাকি একবার মুখ ফসকে জবাব বের হয়েছিলো, ‘আমিনকে পদায়ন করেছি অমুকের সুপারিশে!’
দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আইন শাখা মতামত নির্ভর করে ঘুষের টাকার পরিমানের ওপর। আল আমিন ও কাশেম দুজনই বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সদস্য। আলোচিত ‘জালালী’ হাতটিও একই সমিতি সাবেক নেতা। ‘জালালী’ হাতটির ক্যাডার পরিচয় শিক্ষা। যদিও তিনি এখন অতিরিক্ত সচিব।

আল আমিন, আফসার ও কাশেমের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ জমা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। দুদক খুঁজছে তাদের সম্পত্তির হিসেব।

পক্ষান্তরে সরাসরি প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া কতিপয় শিক্ষক যারা ক্যাডার ঢাালও আত্তীকরণের বিরোধীতা করছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেরি হয় না ‘জালালী’ হাতের। ‘নো বি সি এস নো ক্যাডার’ স্লোগানধারী জুনিয়ররা কে কোন ফেসবুকে বা টুইটারে কী লিখলেন। কোন সংবাদপত্রে কী মতামত প্রকাশ করলেন, এসব বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের আচরণবিধির সব ধারা উপধারা চাবুকের মতো ব্যবহার করতে নিসপিস করে ‘জালালী’ হস্তখানা। সব ধারার ব্যবহার হয় জুনিয়রদের বিরুদ্ধে। হোক সে খুলনা কারাইব কলেজ কিংবা আবু নায়েম গারাইব!

জানা যায়, হক কথা বলার অপরাধে খুলনার আবদুল হককে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় বদলির ফাইল তুলেছিলো এই ‘জালালী’ হাত। হকের অপরাধ তিনি বিবেকবান শিক্ষক হয়ে বিবেক মোতাবেক প্রকাশিত মতের সমর্থন করেছেন মাত্র! হকের আরও অপরাধ রয়েছে! তা হলো তিনি এক কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি সময় যাবত রয়েছেন। তবে, ‘জালালী’ হাতটা গুটিয়ে যায় যখন কেউ অভিযোগ করেন শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা [মাধ্যমিক-২] পদে ফেভিকলের মতো লেগে রয়েছেন ইতিহাসের আফসার উদ্দিন। পদটি প্রভাষকের। শিক্ষা ক্যাডারে হাজার হাজার প্রভাষক থাকলেও সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার সাড়ে তিন বছর পরও একই পদে তবিয়তে বহাল রয়েছেন আফসার।

আইন শাখার কাশেম ও আল আমিন এবং এমপিও শাখার আফসার ‘এন্টি আওয়ামী লীগ এলিমেন্ট’ হিসেবে ক্যাডারে পরিচিত। তবে, তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস ও পরিচয় ঢেকে রাখা ও বড় কর্তার সামনে ‘অনেস্ট’ ও ‘সরকার সমর্থক’ অফিসার হিসেবে  পরিচিত করিয়ে দিতে মাস শেষে ‘জালালী’ হাতে গুজে দিতে হয় গভর্নরের সই করা একই সাইজের কিছু কাগজের টুকরো!

গত বছরের মধ্য জুলাইয়ে চলতি দায়িত্ব পাওয়া মহাপরিচালককে বলা হয়েছিলো  পরিচালক-উপ-পরিচালক ও সহকারি পরিচালক পদগুলো নিজের মতো করে সাজাতে। পরিচালক সরানো তো দূরের কথা এখনও ড্রাইভার আলাউদ্দিনকে এমপিও এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলির ফাইল হাতে এই রুম থেকে ওইরুমে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। এমপিওর দায়িত্বটা কিছুটা হলেও আলাদ্দিনের তিন সহোদর দেখে থাকেন উত্তরাধিকার সূত্রে!

এক বছরের বেশি সময় পার হলেও চলতি দায়িত্বের মহাপরিচালক বর্তমান সেট-আপকে ‘চৌকস’ জ্ঞান করেন মর্মে কিছুদিন পরপর বাণী প্রদান করেন মর্মে কানাঘুষা চলে শিক্ষাভবনে। চৌকসের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এডিয়ে চলেন তারা!

পরবর্তী কিস্তি আগামীকাল।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062589645385742