শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের জাল। বহিরাগত মাদক ব্যবসায়ীদের বিচরণ এখানে নির্বিঘ্ন। হলে বসছে মাদকের আসর। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যেই চলছে মাদক সেবন। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। মাদকের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বটতলাসংলগ্ন বস্তিতে মাদক ব্যবসা সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য আছে। আমরা দ্রুতই পদক্ষেপ নেব। মাদকসেবী কোনো শিক্ষার্থীকে ধরতে পারলে পরিবারকে জানাব। প্রয়োজনে পুলিশে সোপর্দ করব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানায়, ক্যাম্পাসে হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ প্রায় সব ধরনের মাদকদ্রব্য। সন্ধ্যা নামলেই আবাসিক হলগুলোর ছাদে বসছে মাদকের আসর, তা চলছে ভোর পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হলগুলোতে মাদকের ব্যাপকতা লক্ষণীয়। ছাত্রীদের মধ্যেও অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কয়েকটি রুমে নিয়মিত মাদকের আসর বসে। শেরেবাংলা হলের কয়েকটি রুমেও রয়েছে এ ধরনের আয়োজন। এই হলে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ১০০টি ইয়াবা বিক্রি হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের গণরুমে মাঝেমধ্যেই গাঁজার আসর বসে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন অক্সফোর্ড মোড়, আমতলা, নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের পেছনের মোবাইল ফোনের টাওয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার বিভাগ সংলগ্ন চাতালে অবাধে চলে মাদক সেবন। মাদকসেবীরা ক্যাম্পাসসংলগ্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে যৌনকর্মীদের নিয়েও মত্ত থাকে বলে অনেকে জানায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও মাদকের সহজলভ্যতায় ক্রমেই ক্যাম্পাসের পরিবেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে পাঠানো টাকার বেশির ভাগ ব্যয় হচ্ছে নেশা ও যৌনকর্মীদের পেছনে। এরপর তারা অনেকে যুক্ত হয়ে পড়ছে ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কাজে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অবস্থিত বটতলাসংলগ্ন বস্তির বাসিন্দারা বেশির ভাগ মাদক সরবরাহ করে থাকে। এ ছাড়া বাইরে থেকে সংগ্রহ করা হয় মাদক।