সংবাদ সম্মেলন শেষে খামে ভরে টাকা দিলেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা (ভিডিও) - দৈনিকশিক্ষা

সংবাদ সম্মেলন শেষে খামে ভরে টাকা দিলেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা (ভিডিও)

বদরুল আলম শাওন ও সাঈদ হোসেন |

সংবাদ সম্মেলন শেষে কতিপয় নামধারী সাংবাদিকদের খামে ভরে টাকা দিলেন বি সি  এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকরি কলেজের কতিপয় শিক্ষক। ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটি’র উদ্যোগে বুধবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন শেষে টাকা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে ভিডিওধারণ করেছেন দৈনিক শিক্ষার দুজন সাংবাদিক। তবে, কোনও মানসম্মত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের টাকা নিতে দেখা যায়নি।

শিক্ষা ক্যাডারের মর্যাদা রক্ষা কমিটির সংবাদ সম্মেলনের নামে গত কয়েকদিন যাবত ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে কতিপয় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তারা সবাই  শিক্ষা অধিদপ্তর, ডিআইএ এবং সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসায় কর্মরত। নিজেদের ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপে চাঁদাবাজির তথ্য দৈনিকশিক্ষার হাতে এসেছে।

নীচের স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, শহীদ উল ইসলাম নামের একজন সরকারি কলেজের শিক্ষক লিখেছেন “সম্মেলনের ছবি পত্রিকায় ছাপা হয় এমন কিছু করুন, স্টান্ডার্ড গিফটের ব্যবস্থা করুন, চাদা ধার্য্য করুন, যতবার চাইবেন সবাই ততবার দিবে।” শহীদুল বরগুনার একটি কলেজে কর্মরত। ৩০তম বি সি এস মাধ্যমে তিনি সরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেছেন। জানা যায়, তিনি বরিশালের সরকারি বি এম কলেজে পড়াশোনা করেছেন।

অন্যদিকে দেখা যায় সংবাদ সম্মেলন শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু নামধারী সাংবাদিকের মাঝে টাকা ভর্তি খাম দিচ্ছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শিক্ষক ফারহানা বিলকিস। ডিআরইউর সাগর-রুনী মিলানায়তনের নিচে সিড়ির গোড়ায় এই খাম ভর্তি টাকা বিলি করতে দেখা যায়। তবে, অনেক সাংবাদিকই খাম না নিয়ে বরং শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আপনার জাতি গড়ার কারিগর। আপনাদের নৈতিক  ও মানসিক অবস্থা যদি এই হয় তাহলে তো  গোটা জাতির ভবিষ্যত খুবই অন্ধকার।”

তবে ভুঁইফোর ওই সাংবাদিকদের মধ্যে খাম নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হলে ফারহানা বিলকিস টাকা নিয়ে সরে যেতে বাধ্য হন। পরে ওই নামধারী সাংবাদিকদের খাম নিতে ফের সাগর-রুনী মিলনায়তনের ভেতরে যেতে দেখা যায়। এসময় অবশ্য টাকা ভর্তি খাম দেয়ার আগে সমিতির কয়েকজন নেতা ওই সাংবাদিকদের পরিচয় পত্র দেখে যাচাই করে নিচ্ছেন কে কোন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেন।

এদিকে সাগর-রুনী মিলনায়তনের সিড়ির মধ্যে খাম নিয়ে কাড়াকাড়ির সময় এক কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায় আপনারা আপার সাথে উপরে যান সেখানে গেলে পাবেন।

অন্যদিকে সকাল দশটায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিমিয় শুরু করার কথা থাকলেও সমিতির পক্ষ থেকে সদস্য সচিব মো: শওকত হোসেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করা শুরু করেন বেলা এগারোটার দিকে। এর আগে অযথা সময়ক্ষেপন করার কারণে উপস্থিত বেশকয়েকজন সংবাদকর্মীকে নাখোশ দেখা যায়।

বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক এস এম কামাল আহমেদ ও সদস্য-সচিব মো: শওকত হোসেনের নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী হাসান ও জহিরুল ইসলাম এবং ফারহানা বিলকিস। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার সরকারি কলেজগুলোতে কর্মরত অনেক বিসিএস ষাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও পিএইচডির জন্য ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা ক্যাডার আত্তীকরণ বন্ধে আর কোন কলেজ জাতীয়করণ আদেশের আগেই ২০০০ বিধিসহ ক্যাডারে আত্তীকরণ সংক্রান্ত সকল বিধি বাতিল করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন, জাতীয় শিক্ষানীতি’ ২০১০ এবং বিসিএস নিয়োগ বিধি ১৯৮১ এর ব্যত্যয় না ঘটিয়ে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে তাদের নিয়োগ, পদায়ন  ও পদোন্নতি সংক্রান্ত আলাদা বিধিমালা প্রনয়ন করতে হবে।

এসময় ক্যাডার বহির্ভূত শিক্ষকদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ২৩তম বিসিএসের একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা জান্নাতুল মাওয়া বলেন, অন্য কোন ক্যাডারে যদি পার্শ্ব অন্তর্ভূক্তি না থাকে তাহলে শুধু সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কেন হবে?

তিনি আরো বলেন, আমরা কেবল কলেজ শিক্ষক নই। পাশাপাশি আমরা একজন বিসিএস কর্মকর্তাও বটে। আর সেখানে আমরা পিএসসিসহ একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্ন্তভুক্তি হয়েছি। সেখানে বেসরকারি থেকে জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আত্মীকৃত করে আমাদের সাথে বিসিএস ক্যাডারে অর্ন্তভুক্ত করাটা ঠিক হবে না।

জাতীয়করণকৃত কলেজের শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে তাদের নিয়োগ, পদায়ন পদোন্নতি সংক্রান্ত আলাদা বিধিমালা প্রণয়নের দাবি না মানা হলে প্রয়োজনে আদালতে আশ্রয় নেবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এছাড়া তাদের দাবি না মানলে লাগাতার কর্মবিতরতিসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলেও জানান।

সরকারি কলেজবিহীন উপজেলায় একটি করে কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়ার পরপরই জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের নন ক্যাডার করার দাবী তোলেন সরকারি কলেজের কতিপয় শিক্ষক।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030839443206787