এ বছর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এর মানে দাঁড়াল, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না। গতকাল বুধবার বুয়েটের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের অনুষ্ঠিতব্য সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তারা।
বুয়েটের শিক্ষা পরিষদের সদস্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেছেন, বুয়েট দীর্ঘদিন ধরেই যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে আসছে, সেভাবেই পরীক্ষা নেয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইউজিসির কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে সরাসরি কিছু না বলে মিজানুর রহমান জানান, আগে যেভাবে হয়েছে, এবারেও সেভাবেই ভর্তি পরীক্ষা নেবেন তারা।
বুয়েট প্রথমে শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদন আহ্বান করে। এরপর সেগুলো প্রাথমিক বাছাই করে নির্ধারিতসংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়। এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করে।
গত ২৩ জানুয়ারি দেশের সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সমন্বিতভাবে ভাবে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ ৫টি বড় বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছিল।
এ জন্য তারা নতুন এ পদ্ধতিতে যাওয়ার বিষয়ে কোনো কথা দেয়নি। এর মধ্যে কিছুদিন আগেই ইউজিসির আরেক সভায় সমন্বিত পদ্ধতির পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, অন্যান্য বারের মতোই চলতি বছর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ২৩৮তম সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সব দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বিচ্ছিন্ন ভর্তি পরীক্ষার শ্রম, অর্থ ও সময়ের ব্যয় কমাতে যে মত দিয়েছেন, তার প্রতি সম্মান জানায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্যবোধ, ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশের বিষয়টিকেও অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়ের আলোচনা হয়। তাই এ বছর ইউজিসির তত্ত্বাবধানে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এতে অংশগ্রহণ না করে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঝুঁকিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষা কেন্দ্র, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক হুমকি ও প্রভাবের বিষয়গুলোও প্রাধান্য পেয়েছে সভার আলোচনায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার আগের নিয়মেই পরীক্ষা হবে। পরে আলাপ-আলোচনা করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার যাওয়া হবে কী না সে বিষয়ে সিন্ধান্ত হবে। এসব বিষয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের কয়েকজন সিনিয়র সদস্য, ডিন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে নিয়ে উপাচার্য ইউজিসির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমবে : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষার্থীবান্ধব সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা, তবে...
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে ঢাবির মিশ্র প্রতিক্রিয়া
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা একটি সাহসী সিদ্ধান্ত
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে দুই দিন, আবেদন ১০টিতে
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে ঢাবি শিক্ষকের যত যুক্তি
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা : বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় প্রাপ্তিতে মেধাই ভিত্তি
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: ভিপি নুর
সমন্বিত পরীক্ষার আওতায় সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই আসতে হবে
গত ২৩ জানুয়ারি দেশের সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সমন্বিতভাবে ভাবে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ ৫টি বড় বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছিল।
এ জন্য তারা নতুন এ পদ্ধতিতে যাওয়ার বিষয়ে কোনো কথা দেয়নি। এর মধ্যে কিছুদিন আগেই ইউজিসির আরেক সভায় সমন্বিত পদ্ধতির পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের উপাচার্যরা জানান, এ বিষয়ে তাদের নিজেদের শিক্ষা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানাবেন। ইউজিসির চাওয়া, ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ মত জানাতে হবে। এর মধ্যেই গতকাল বুয়েট ও চট্টগ্রাম আগের পদ্ধতিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল।