ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৪ মে) ভোররাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সনদপত্র, মেয়েদের খেলার সনদপত্র, মেডেল, রেজুলেশন বই, কারিগরি শাখার কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। এছাড়া একটি পেনড্রাইভও নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় ও স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক উজ্জল বিশেষ ক্লাসের জন্য স্কুলে গিয়ে দেখেন অফিস কক্ষে আগুন জ্বলছে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরাও উপস্থিত হন। খবর পেয়ে ধোবাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আহাম্মদ মোল্লা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুজ্জামান বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন মিয়া দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র নিয়ে কেলেঙ্কারির দায়ে একজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল, এছাড়া বিদ্যালয়ে তেমন কোনো ঝামেলা নেই।
অফিস কক্ষে আগুন দিলেও বিদ্যালয়ের প্রধান গেইটে তালা লাগানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দেয়াল টপকে অফিসে প্রবেশ করেছে। উল্লেখ্য যে, নারী ফুটবলারদের সৌজন্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, কলসিন্দুর উচ্চমাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজটি জাতীয়করণের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজে আগুন দেওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।
প্রধান শিক্ষক রতন মিয়া বলেন, ৬ মে থেকে বিদ্যালয়ে রমজানের ছুটি চলছে। তবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস চালু আছে। সকাল আটটা থেকে বিশেষ ক্লাস শুরু হয়। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বিশেষ ক্লাসের জন্য আসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আগুনের ঘটনা টের পায়। দুর্বৃত্তরা তালা ভেঙে আগুন দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহাম্মদ মোল্লা বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্কুলের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজন কারও নাম বলা হয়নি। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।’
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের সরকারিকরণের কাজে বাধা সৃষ্টি করার জন্যই কেউ এমন কাজ করেছে।
কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে শিক্ষার্থীরা তিনবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ ফুটবলে জাতীয় পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন হয়। ওই শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে উচ্চমাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখায় ভর্তি হয়। বাংলাদেশ নারী দলের কৃতি ফুটবলার মারিয়া মান্দা, মার্জিয়া ও সানজিদাসহ বয়সভিত্তিক বিভিন্ন জাতীয় দলে কলসিন্দুর উচ্চমাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের কমপক্ষে ১০ জন মেয়ে নিয়মিত খেলেন।