সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা এই সময়ের দাবি - দৈনিকশিক্ষা

সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা এই সময়ের দাবি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সান্ধ্যকোর্স নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষকদের অবস্থান। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, বিশ্ববিদ্যালয় ও সুধীমহলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক যুদ্ধ চলছে। তবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সান্ধ্য কোর্সের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। কেন বিপক্ষে তার সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। আমি যতোটুকু জেনেছি তা হলো, নিয়মিত কোর্সের মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। শিক্ষকরা সান্ধ্য কোর্সে বেশি সময় দেন এবং এখানে বেশি টাকার লোভে অতি  উৎসাহী হয়ে কাজ করেন। তারা মূল কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ক্ষতিগ্রস্ত হন নিয়মিত শিক্ষার্থীরা।

যদি সান্ধ্য কোর্স বন্ধ করা হয়, তাহলে কী ঘটবে তা বলছি। সান্ধ্য শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সেখানে পড়াবেন। সমস্যা থেকেই গেল। আমি মনে করি, সান্ধ্য কোর্স এখন যুগের চাহিদা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত আসনে সকল মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে না। মেধাবীদের আজন্ম লালিত স্বপ্ন একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করা। তারা যদি সান্ধ্য কোর্সে ভর্তি হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে পারেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারেন, এটা তো ভালো কাজ। তাছাড়া শিক্ষা মানুষের অধিকার; বিশেষ করে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে,তা আবার যদি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীরাও পড়ালেখা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদেশের মানুষের অধিকার আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় বহন করবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ষোলো কোটি মানুষের অহংকার। তাই যে নামেই হোক সান্ধ্য বা দিবা সকলের জন্য উন্মুক্ত হোক এই বিদ্যাপিঠ। 

যদি সান্ধ্য কোর্স বন্ধ করা হয় তা হবে শিক্ষার সংকোচন নীতির শামিল, যেমন বৃটিশরা করেছিল। বরঞ্চ যুগের সাথে তালমিলিয়ে আরো নতুন নতুন কোর্স চালু করা প্রয়োজন। উন্নত দেশে সান্ধ্য কোর্সের মাধ্যমে ৮০-৯০ বছর বয়সেও শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন। সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হলে শিক্ষার অবারিত সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে; বঞ্চিত হবে লাখো লাখো শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে সকলের জন্য। অনেক মেধাবী পেশাজীবী এখান থেকে এমএড, এমবিএসহ বিভিন্ন ডিগ্রি নিয়ে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করছেন; তা-ও বন্ধ হয়ে যাবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে কিছু অর্থ উপার্জন করে সচ্ছল জীবনযাপন করছেন এবং জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করছেন। তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে জাতি গড়ছেন। আমি এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বলছি, সান্ধ্য কোর্স  একটি যুগোপযোগী শিক্ষাপদ্ধতি। এটি বন্ধ করা যাবে না। এর পক্ষে যারা আছেন তারা সোচ্চার হোন।  সকল শিক্ষক এর পক্ষে থাকুন। আপনাদের ধন্যবাদ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সান্ধ্য কোর্স শিক্ষা সম্প্রসারণে সহায়ক হবে; আপনারা এর পক্ষে থাকুন।

লেখক: অধ্যক্ষ মো. আবুল বাশার হাওলাদার, সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068888664245605