বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ব্যর্থতায় আগামী ২৬ জানুয়ারি (শনিবার) মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন হচ্ছে না। ব্যানবেইসের কর্মকর্তারা টেলিফোনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে এ তথ্য জানান। ২৬ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ব্যানবেইস প্রস্তুতি নিতে পারেনি বলে জানানো হয়। জানা যায়, ব্যানবেইসের কয়েকজন বিএনপি-জামাতপন্থী কর্মকর্তা অযথা বিদেশ ভ্রমণ আর দেশের মধ্যে কথিত পরিদর্শন করে সময় কাটাচ্ছেন। ফলে পূর্বের বছরগুলোর মত খসড়া কর্মপরিকল্পনা ও তফসিল অনুযায়ী ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন ২৬ জানুয়ারি গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিতে পারেনি। নির্বাচন কবে হবে তাও ঠিক নেই। একাধিক সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে এতথ্য জানিয়েছে।
একাধিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোববার (২০ জানুয়ারি) দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ব্যানবেইসের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আজ রোববার সকালে তারা ইমেইলে পেয়েছেন।’
শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা তৈরি করতে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের’ আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চাসহ একে অপরকে সহযোগিতা করা, শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি ও ঝড়ে পড়া রোধে সহযোগিতা, পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিতসহ ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের স্টুডেন্টস কেবিনেট। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো ছাত্রছাত্রী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দিতে পারবে। প্রতি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর তাদের মধ্য হতে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজন নির্বাচিত হবে।
এছাড়া নির্বাচনী প্রচারের জন্য কোনো রকম ছাপানো পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার ও দেয়াল লিখন করা যাবে না। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করতে পারবে। তবে প্রতিষ্ঠানের সীমানা বা চত্বরের বাইরে প্রচার করা যাবে না। নির্বাচন পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়েই তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকরা দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণির একজন করে দুজন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করবেন। নির্বাচন ও এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রয়োজনে একজন সহকারী শিক্ষককে সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কক্ষ স্থাপন করে গোপনীয়তার সঙ্গে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্টুডেন্টস কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় একজন প্রধান প্রতিনিধি মনোনীত করবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করতে হবে, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সংরক্ষণ (বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি ইত্যাদি দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ণ এবং আইসিটি) এই ৮টি প্রধান দায়িত্বে আটজন নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন।