আগামী অর্থবছর (২০১৬-১৭) বাজেটে ২০ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার (১৩ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
সংগঠনের অতিরিক্ত মহাসচিব প্রদীপ কুমার সাহা ব্যানবেইসের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৯ হাজার ৬৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এরমধ্যে ৩২৭টি সরকারি। এছাড়া দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম নির্ধারিত হওয়ায় ১ হাজার ৩০১টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
মাধ্যমিক স্তরে মোট ২২ হাজার ৭৫৪টি বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৮ জন শিক্ষক রয়েছেন। মোট শিক্ষার্থীর ৩ শতাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৯৭ শতাংশ বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিশাল অংশের শিক্ষার্থী চরম অবহেলার শিকার, যা একটি দেশে কাম্য নয়। দেশকে দ্রুত জাতীয় উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে হলে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলে শিক্ষার্থীরা কম খরচে লেখাপড়ার সুযোগ ও যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে অভাবনীয় কাজ করে যাচ্ছেন। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার উন্নয়নে কর্মকাণ্ডে সরকার আগামী অর্থবছর এসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের উদ্যোগ নেবে বলে মনে করেন তিনি। জাতীয়করণের আগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।
দাবি বাস্তবায়নে ৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে- ৩১ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, ২ জুন জেলা সদরে মিছিল ও জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি, ৫ জুন জেলায় জেলায় সংসদ সদস্যদের স্মারকলিপি, ১৭ মে থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমাবেশ ও ২০ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকায় মহাসমাবেশ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, প্রধান উপদেষ্টা এসএম আব্দুল জলিল, রাজশাহী শাখার উপদেষ্টা আব্দুল বারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোদাচ্ছেরুর রহমান মঞ্জু, সাতক্ষীরা শাখার উপদেষ্টা মো. ইউনুস আলী, বরিশাল শাখার উপদেষ্টা মো. মজিবুর রহমান সহ শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক নেতারা বলেন, মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন খাতে এবং স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা অস্বচ্ছতার বেড়াজালে বন্দি। এই বন্দি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষা জাতীয়করণ করা অপরিহার্য।