৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতার ফাইল বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা দেবেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষকদের এ সুখবর জানিয়েছেন। বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন শিক্ষামন্ত্রী। সভায় উপস্থিত শিক্ষক নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক শেষ হয় দুপুর ১টায়। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ মতবিনিময় সভায় শিক্ষক নেতারা বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি দাওয়ার বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করেন। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণের জন্য থোক বরাদ্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নতুন করে এমপিও এবং সরকারিকরণ বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক নেতারা আলোচনা করেন। একে একে শিক্ষক নেতাদের বক্তব্য শোনেন শিক্ষামন্ত্রী।
সভাশেষে মন্ত্রী বলেন, এবার নতুন প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে ননএমপিও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন আহবান করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ- মাদরাসা-কারিগরি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৯ হাজার ৪ ৯৮টি আবেদন অনলাইনে জমা পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় যাচাই -বাছাই চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাঠ পর্যায়ে সরেজমিনে যাচাই-বাছাই চলবে। যাচাই-বাছাই করে এমপিওভুক্ত করা হবে।’ এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মতবিনিময় সভা শেষে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের নেতা ও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবসর ও কল্যাণ তহবিলের ৭৫৭ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত চিঠি আমরা হাতে পেয়েছি।
সভায় মন্ত্রীর বিশেষ আমন্ত্রণে নবগঠিত স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন, সদস্য-সচিব সৈয়দ জাফর আলী ও ১নং যুগ্ম-আহ্বায়ক বিপু চন্দ্র সরকার বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বেসরকারি শিক্ষক নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল সিদ্দিকী, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আসাদুল হক, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সহসভাপতি ও অবসর সুবিধাবোর্ডের সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আজিজুল ইসলাম, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক ও সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: আবুল কাশেম, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার, স্বাধীনতা মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান নাঈম, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহজাহান খান, বাংলাদেশ মাদারাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ হারুন-অর-রশিদ এবং বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজীসহ মোট ৩৯টি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু তার আধঘন্টার সূচনা বক্তব্যে শিক্ষকদের যাবতীয় দাবি-দাওয়ার বিষয় তুলে ধরেন। বৈঠক শেষে শাহজাহান সাজু দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, অনেকদিন পর শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পেরেছেন। আমার সংগঠন মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতা দেয়ার ঘোষণা দেবেন।
সভাশেষে বাংলাদেশ মাদারাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ হারুন-অর-রশিদ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় কামিল/ফাজিল/আলিম/দাখিল মাদরাসা প্রশাসনিক (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, সহসুপার) পদে আরবি বিষয়সমূহে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা চেয়ে জেনারেল (নন অ্যারাবিক) শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদ বঞ্চিত করা হয়েছে। নীতিমালার এ বিষয়গুলো সংশোধনের দাবি জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী তাৎক্ষণিক কিছু জানাননি।