এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়া এখন আর কোনো অপরাধ নয়; এমন ধারণা জন্ম নিয়েছে এক শ্রেণির অর্থলোভী শিক্ষকের মধ্যে। বিষয়টি অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। অর্থলোভী ওইসব শিক্ষক আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠছে প্রতি বছরই। এ বছর অতিরিক্ত ফি দিতে না পেরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দরিদ্র ছাত্রী তাসলিমা ফরম পূরণ করতে পারেনি। তাই আগামীর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া হচ্ছে না তার।
কালিহাতী উপজেলার নরদহি গ্রামের দিনমজুর মজিবরের মেয়ে তাসলিমা আক্তার। শত অভাব-অনটন পড়ালেখা থেকে কখনও বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি মেয়েটিকে। তারপরও স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজেপড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দ্বিগুণ টাকায় ফরম পূরণ করতে না পেরে আগামীতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না তাসলিমা।
এ নিয়ে যেন কষ্টের সীমা নেই দরিদ্র পরিবারটির। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাসলিমা আক্তার জানায়, আমার কিছুই ভালো লাগছে না। সামান্য কিছু টাকার জন্য এ বছর আমি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলাম না। আমার সহপাঠীরা সবাই কলেজে যাবে কিন্তু আমি যেতে পারব না। ভবিষ্যতে আমার পড়ালেখা আর হবে কি না তাও জানি না।
মেয়েটি জানায়, আমরা তিন হাজার টাকা নিয়েও ফরম পূরণের জন্য কাকুতি-মিনতি করেছি। কিন্তু তাদের মন গলাতে পারিনি। আমাকে স্যাররা ফরম পূরণ করতে দিলেন না। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণেই মেয়ে পরীক্ষায় দিতে পারল না বলে আপসোস করেছেন তাসলিমার মা রাশেদা বেগম। তিনি বলেন, আমার মেয়ে তাসলিমা শুধু ঘরে বসে থাকে আর কান্নাকাটি করে। যদিও অতিরিক্ত ফি নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম জানান, এ ধরনের অভিযোগ পেলে বা প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।