অনলাইনে এমপিও : ঘুষ-হয়রানি বন্ধে নীতিমালা চাই - দৈনিকশিক্ষা

অনলাইনে এমপিও : ঘুষ-হয়রানি বন্ধে নীতিমালা চাই

আশরাফুল ইসলাম |

হয়রানি, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ এবং সময় বাচাঁতে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম নয়টি আঞ্চলিক কেন্দ্রে বিকেন্দ্রীকরণ করেছে সরকার। আগে এককভাবে সিদ্ধান্ত হতো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে। প্রায় এক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বিকেন্দ্রীকরণের ফল হয়েছে উল্টো।

ঘুষ দেয়ার ক্ষেত্র, হয়রানি, সময় অপচয়, আর অপমান অপদস্থের মাত্রা বেড়েছে বহুগুণে। আর এসব হচ্ছে অনলাইন এমপিওভুক্তির জন্য সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা/নীতিমালা না থাকায়। অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নির্দেশিকার বাইরেও অনেক নথি তলব করায়। যা নির্দেশিকায় নাই, কিন্তু কর্মকর্তারা বলছেন দিতে হবে। আবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাহিদা মাফিক ঘুষ দিলে সব জায়েজ হয়ে যায়। তখন ত্রুটিপূর্ণ ফাইল ফরোয়ার্ড করতেও বিলম্ব করেননা তারা। ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় পরের ধাপে গিয়ে তা আটকে যায়। এটাই বাস্তবতা।

সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা আরো হয়রানির ভয়ে নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চান না।

এ সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আবেদনকারী এই লেখককে বলেন, ইতিপূর্বে পদত্যাগকারী শিক্ষকের বিপরিতে নিয়োগ নিয়ে এমপিও নির্দেশনা মোতাবেক সকল কাগজপত্র দিয়ে যথা নিয়মে আবেদন করেছেন। আবেনদটি উপজেলা থেকে জেলায় পাঠানো হয়। জেলা থেকে তা রিজেক্ট করা হয়। কারণ লেখা হয় ‘পেপার স্কান ইজ নট প্রোপারলি।’

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রোপারলী শব্দের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। পরে দ্বিতীয় বার ওই শিক্ষা অফিসের একজনের সহায়তায় পেপারস স্কান করে পাঠানো করা হয়। এবার উপজেলা এবং জেলা শিক্ষা অফিসে চাহিদা মাফিক ঘুষও দেওয়া হয়। ফলে তা উপ-পরিচালক (ডিডি) অফিস পর্যন্ত সেন্ড হয়।

তারপর ডিডি অফিস থেকে রিজেক্ট করা হয়। কারণ লেখা হয়, পদত্যাগী শিক্ষকের নিয়োগ ও যোগদানপত্র এবং শেষ এমপিও কপি নাই। অথচ নির্দেশিকার কোথাও চাওয়া হয় নাই ওই কাগজ তিনটি। আবার ওই কাগজ দিয়ে আবেদন করে উপজেলা ও জেলায় ঘুষ দেয়া হয়। এবার জেলা থেকে রিজেক্ট করে লেখা হয় এমপিও সিট থেকে পদত্যাগী শিক্ষকের নাম আগে বাদ দিতে হবে তার পরে আবেদন। তাহলে আগের বার ওই আবেদন ডিডি অফিস পর্যন্ত গেল কেমনভাবে ? উত্তর সবার জানা কিন্তু বলতে মানা!

এ সম্পর্কে আরেক আবেদনকারী বলেন, আমি একজনের নাম এমপিওশিট থেকে কাটাতে গিয়ে আবেদন ইএমআইএস সেলে সেন্ড হয়েছে দেখেছি। পরে দেখা যায় নাম কাটেনি। পুনরায় আবেদন করেছি এরপর নাম কাটা হয়েছে। আর প্রতিবার আবেদন সেন্ড করাতে উপজেলা, জেলায় চাহিদা মোতাবেক উৎকোচ দিয়েছি। যদিও এই আমি, এই আমার একই আবেদন। কাজ হয়নি তাদের কারনে টাকা দিতে হয় প্রতিবারই।

অপর এক আবেদনকারী বলেন, আমি চাহিদা মাফিক তাদের নিয়ম মেনে করে ফাইল ডিডি অফিসে সেন্ড করানোর পরে সেখান থেকে রিজেক্ট করা হলো আমার বিবিএ’র সনদ (এশিয়ান ইউনিভারসিটি) যাচাই নাই বলে তা ফিরিয়ে দেয়া হয়। একথাটি আমাকে উপজেলা বা জেলা থেকে বলা হয় নাই। যদি উপজেলা থেকে বলা হতো অথবা নির্দেশিকায় লেখা থাকতো তাহলে আমাকে এভাবে ঘুষ দিতে হতো না।

এ বিষয়ে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আমিনুল ইসলাম রতন বলেন, অনলাইন এমপিও পদ্ধতি অবশ্যই একটি ভাল উদ্যোগ। এক্ষেত্রে সচ্ছতা আর জবাবদিহিতার জন্য নির্দেশিকা/নীতিমালা সহজ সাবলীল ভাষায় সবার জন্য বোধগম্য করে স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।

এরফলে কত ধরণের কাগজ লাগবে এবং কোনটা কোন সাইজে স্কান করতে হবে তার তালিকা থাকলে চাহিদামত তথ্যাদি উপস্থাপনে সমস্যা হবে না। একই সাথে সব কাগজ ঠিক থাকলে কোন বাহানা করে অফিসাররা টাকা চাইলে ভুক্তভোগী প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন। প্রতিবাদ করতে পারলে ঘুষের লেনদেন কমবে।

জানতে চাইলে বনপাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা অর্নাস কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অনলাইন পদ্ধতি বুঝতে সবারই একটু সময় লাগছে। না বুঝার কারনে অসাধু কর্মকর্তারা ঘুষ নেওয়া আর দূর্নীতি চালু রেখেছে। তবে স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকলে অসাধু কর্মকর্তাদের ধরা যাবে বলে মনে হয়।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038728713989258