বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত ব্যবহারিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী অনশন অর্থ উপবাস বা অনাহার; ক্লিস্ট, উপবাসপীড়িত; অনাহারে কাতর। আরো বলা হয়েছে, ব্রত, উপাবাসের দৃঢ়সঙ্কল্প; অনাহার প্রতিজ্ঞা ইত্যাদি।
অনশন সম্পর্কে বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, অনশনের কোন নিয়ম নাই। দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে কিছু না খেয়ে থাকাই অনশন। অনশনের একটাই নিয়ম যে কিছু খাওয়া যাবে না। শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের মাধ্যম হিসেবেই অনশনকে গ্রহন করা হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, শহীদ রুমি স্কোয়াড বাংলাদেশে জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে অনশন করেছিল। ভারতে আন্না হাজারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনশন করেছিল। বিএনপির সময়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী দাবি আদায়ের জন্য অনশন করেছিল।
উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে: অনশন বা উপবাস বলতে শাব্দিকভাবে বোঝায় কোনরূপ খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ না করা। তবে খাবারের অভাবের কারণে অভুক্ত থাকা অনশন্ নয়। প্রাচীন অনেক ধর্মেই অনশনের প্রথা প্রচলিত আছে। তবে নিকট অতীতে রাজনৈতিক দাবী আদায়ের জন্য অনশনের ব্যবহার দেখা যায়। মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে অনশনের ব্যাপক ব্যবহার করেন। তাঁর “সত্যাগ্রহ ব্রত” অনুসারে, অনশনের মাধ্যমে জনগনের মধ্যে শুভ শক্তির জাগরনের মাধ্যমে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব। পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশে মওলানা ভাসানী অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
বর্তমানেও রাজনীতি অথবা বিভিন্ন দাবী আদায়ের জন্য এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী যতীন্দ্র নাথ দাস ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত অবস্থায় ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মারা যান।স্বাধীন ভারতে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলার ভাষা আন্দোলনকারী পট্টী শ্রীরামালুও দীর্ঘদিন অনশনে মারা যান। হিন্দুধর্মে বিভিন্ন পূজা পার্বণের পূর্বে অনশন করার রীতি প্রচলিত আছে। অনশন তিন রকম, স্বল্পানশন, অর্ধানশন ও পূর্ণানশন।