‘বাংলা একাডেমির অভিধান ও ব্যাকরণ কর্মসূচির আওতায় আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ লাভ করেছি যার মধ্য দিয়ে জাতির অভিধান মনষ্কতা তৈরি হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে আভিধানিক পরনির্ভরশীলতাও হ্রাস পেয়েছে।
তবে এসব অভিধান প্রণয়নের একটি সুনির্ধারিত নীতিমালা নির্ধারিত থাকা প্রয়োজন এবং নিয়মিত হালনাগাদের মাধ্যমে অভিধানগুলোকে যুগোপযোগী করে তোলাও জরুরি বলে মত দিয়েছেন বক্তরা।
শুক্রবার বিকেলে অমর একুশে বইমেলা ২০১৬- উপলক্ষে মেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : অভিধান ও ব্যাকরণ কর্মসূচি, অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক হাকিম আরিফ এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আহমদ কবির।
অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার তার প্রবন্ধে বলেন, প্রতিষ্ঠার গোড়ার দিক থেকেই বাংলা একাডেমি অভিধান প্রণয়ন ও প্রকাশ কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. মুহম্মদ এনামুল হকের মতো পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ যেসব অভিধান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা-ই পরবর্তীকালে বিকশিত হয়ে বাংলা একাডেমির অভিধানকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে।
বাংলা একাডেমির অভিধান বিষয়বৈচিত্র্যের দিক থেকেও অনন্যতার দাবিদার। আঞ্চলিক ভাষার অভিধান, বাংলা-ইংরেজি অভিধান, বাংলা ভাষার বিবর্তনমূলক অভিধান, তুর্কি-আরবি-ফারসি অভিধান, ছোটদের অভিধান এবং অতি সম্প্রতি প্রণীত আধুনিক বাংলা অভিধান একাডেমির অভিধান-সন্ধিৎসারই পরিচয়বহ।
তিনি বলেন, অভিধানের পাশাপাশি প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যকারণ এবং বিজ্ঞান বিশ্বকোষের মতো মহাকায় কোষগ্রন্থ জ্ঞানান্বেষু মানুষের কাছে বিপুলভাবে আদৃত হয়েছে। তবে এখন পরিবর্তমান সময়ের দিকে লক্ষ রেখে এমন একটি অভিধানের প্রয়োজন যেখানে শব্দ চয়িত হবে সমকালীন প্রমিত ভাষার সাহিত্য থেকে, পৌনঃপুনিকতার বিচারে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আহমদ কবির বলেন, বাংলা একাডেমির প্রধান কাজের মধ্যে অভিধান ও ব্যাকরণ কর্মসূচি অন্যতম। এদেশে খ্যাতনামা গবেষকবৃন্দ যে নিষ্ঠা ও শ্রমে একাডেমির অভিধান প্রণয়ন করেছেন তা আজ গোটা বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে সমাদৃত হচ্ছে।