লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে অর্থনীতি, পদার্থবিজ্ঞান ও কৃষি শিক্ষা বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। কলেজে নয়জন শিক্ষকের পদ তিন থেকে সাত বছর ধরে শূন্য। এতে এখানে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে ১৯ জন শিক্ষকের পদ আছে। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৯ জন শিক্ষক। এর মধ্যে অর্থনীতি, পদার্থবিজ্ঞান ও কৃষি শিক্ষা বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। কলেজের অন্য বিষয়ের শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিষয়ে পাঠদান করানো হয়। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনায় দুজন এবং বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগে একজন করে শিক্ষক নেই। কলেজের একাদশ, দ্বাদশ ও স্নাতকে তিনটি বর্ষে মোট ১ হাজার ৫৫৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
কলেজের আটজন শিক্ষার্থী জানান, ২০১২ সালের ২৭ মার্চ কলেজে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়ক অবরোধ করে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় লেংড়া বাজার এলাকায় রাস্তার ওপর টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে এই অবরোধ করে রাখে। এর আগেও চারবার সড়ক অবরোধ করে তারা। শিক্ষক-সংকটের কারণে তাদের প্রতি বর্ষের পাঠ্যক্রম (সিলেবাস) শেষ করা সম্ভব হয় না। এতে তাদের পড়াশোনা করতে ভীষণ সমস্যা হয়।
কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. আবুল কালাম বলে, ‘তিন বছর ধরে অর্থনীতি বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। পাঠদান হচ্ছে না। আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বাদশ শ্রেণির একজন ছাত্র বলে, তার বাবা রিকশা চালান। বেসরকারি কলেজে লেখা-পড়ার খরচ চালানোর মতো তাদের সাধ্য নেই। এ কারণে সে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। শিক্ষক-সংকটের কারণে এখানে পাঠদান মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ায় সে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কলেজ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক-সংকটের কথা জানিয়ে চলতি বছর কলেজ কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) ১০টি আবেদন পাঠিয়েছে। এ ছাড়া অধ্যক্ষ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে সরাসরি একাধিকবার দেখা করেন। এরপরও কোনো শিক্ষক পাওয়া যায়নি। বরং যারা অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন, সেই পদগুলোও শূন্য হয়ে পড়ে আছে। সর্বশেষ জুন মাসে কলেজের শূন্য পদের কথা জানিয়ে অধ্যক্ষ মাউসির মহাপরিচালকের কাছে একটি আবেদন পাঠান।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. আবদুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষক-সংকটের কথা জানিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চিঠি দিয়েছি, কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অনেক সংকটের পরও আমরা চেষ্টা করছি পাঠদান যেন ব্যাহত না হয়।’