মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের পাঠককান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি আবাসিক হোটেল, একটি দোকান ও তিনটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজে শুভেচ্ছা ব্যানার লাগাচ্ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক রওনক হাসান। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জনি হাওলাদার বাধা দেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের তিন হাজারের বেশি মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেন। বেশ কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ সময় পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার আবাসিক হোটেল মাতৃভূমিতে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। পরে শহরের পাঠককান্দির লাল মিয়া হাওলাদার, জামাল হাওলাদার ও আবদুল মজিদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আহত একজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আবাসিক হোটেল মাতৃভূমির ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘চারপাশ দিয়ে ৩০০-র বেশি হামলাকারী হোটেলে হামলা করলে আমরা সবাই বাইরে চলে আসি। পরে চার ধাপে আমাদের হোটেলে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হোটেলের বাইরে ও ভেতরে হামলা চালায়। হামলাকারীরা সিসিটিভির ক্যামেরা, টিভি, কম্পিউটার ও হোটেলের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় হোটেলের ক্যাশবাক্স ভেঙে প্রায় ৭ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমরা এ ঘটনা আমাদের মালিকপক্ষকে জানিয়েছি।’
পাঠককান্দি এলাকার লাল মিয়া হাওলাদার বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মীরা হঠাৎ আমাদের এলাকার তিনটি বাড়ি লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইটপাটকেল ছুড়ে মেরেছে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু নাঈম বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষ বাধানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল। পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকায় দুই পক্ষই সরে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির মাহমুদ বলেন, ‘মাদারীপুরে কেউ যাতে ছাত্রলীগের সম্মানহানি করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। দুপুরে ছাত্রলীগের কর্মীদের মাঝে তুচ্ছ ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করলে প্রশাসনের সহযোগিতায় উভয় পক্ষের লোকদের সরিয়ে দেওয়া হয়।’
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।