বহুবছর যাবত ব্যাঙের ছাতার মতো গজাচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। মানের বালাই নেই। নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই।
উচ্চশিক্ষার দেখভাল করার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জরিপ বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে মাত্র ১০টির মান ‘ভালো’, কয়েকটির ‘মোটামুটি’ এবং বেশির ভাগের মান ‘খুব খারাপ’।
গতকালের দৈনিকশিক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন অনুমোদন পাওয়া ছয়টি নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়াবে ৮৯। আর এর দুই-তৃতীয়াংশই গড়ে তোলা হয়েছে ঢাকা নগরীতে।
সনদবাণিজ্য থামাতে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল, রাজধানীতে আর নয়, বিশ্ববিদ্যালয় নেই এমন জেলাই প্রাধান্য পাবে নতুন অনুমোদনে। বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। আরো ছয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাত্র দুটি যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় নেই এমন জেলায়, রাজধানী পাচ্ছে আরো দুটি।
আইনে বলা আছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে তার অধীনে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালানো হবে। তবে বাস্তবে চলে বাণিজ্য।
দৈনিকশিক্ষায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিএনপি-জামাত জমানায় ট্রাস্টি বোডে থাকেন জামাতপন্থীরা। আবার আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর কেউ কেউ সমমনা লোকদের ট্রাস্টিতে অনুপ্রবেশ ঘটান। এদের ধান্দা থাকে একটা অনুমোদন বাগিয়ে কোথাও একটা ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে পারলেই হলো। লাভজনক খাত হয়ে ওঠায় অনেক রাজনীতিবিদও এ ‘ব্যবসা’য় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে অনুমোদন দানের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করে। নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েও সরে আসতে হয়। টাকার বিনিময়ে ট্রাস্টিতে নাম লেখান ছাত্র ও মূলধারার সরকারপন্থী রাজনীতিবিদরা।
কিছুদিন আগে খোদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই মুদির দোকান বা গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠান হতে পারে না।’ চেয়ারম্যান পদে আসার আগে তিনি ছিলেন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
আমরা তাঁর কাছে আরও কিছু বেশি আশাকরি। মুদি দোকান আর সনদতৈরির কারখানার বিস্তার থামান এখনি।নইলে মুখ থুবড়ে পড়বে গোটা সমাজ।
শফিকুল ইসলাম
কে ডি এ এভিনিউ, খুলনা।