ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ফোন করে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিয়েছে এক কলেজছাত্রী। এদিকে জাবরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রশাসনের সহায়তায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ পণ্ড করে দিয়েছেন। দুটি বিয়েই আজ রোববার হওয়ার কথা ছিল।
সেনগাঁও ইউনিয়নের কয়েকজন বলেন, বাবা-মা ওই কলেজছাত্রীর (১৭) বিয়ে ঠিক করেন। মেয়েটি এতে রাজি ছিল না। এ জন্য তাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। গত শুক্রবার মেয়েটি খুদে বার্তা পাঠিয়ে তার দুই সহপাঠীর সাহায্যে ইউএনওর মুঠোফোন নম্বর জোগাড় করে। এরপর সে ইউএনওকে ফোন করে তার বিয়ে বন্ধ করার অনুরোধ জানায়। ইউএনও এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সেনগাঁও ইউপির চেয়ারম্যানকে তাৎক্ষণিকভাবে বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন।
মেয়েটি বলে, ‘আমি পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ যাত্রায় রক্ষা পেলাম।’
জাবরহাট ইউপির কয়েকজন বলেন, বাবা-মা এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৬) মেয়েটির বিয়ে ঠিক করে। এ জন্য লোকজনকে দাওয়াতপত্র দেওয়া হয়। একটি দাওয়াতপত্র দেখতে পেয়ে জাবরহাট ইউপির চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর গত শুক্রবার বিষয়টি ইউএনওকে জানান। একটি দাওয়াতপত্র তিনি প্রশাসনের কাছেও পাঠান। তা দেখে ইউএনও ইউপি চেয়ারম্যানকে বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। শুক্রবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য ও গ্রাম পুলিশ নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন।
মেয়েটি বলে, ‘আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কলেজে পড়তে চাই, বড় হতে চাই। বিয়ে বন্ধ হওয়ায় আমি খুশি। প্রশাসনকে ধন্যবাদ।’
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ওই দুটি মেয়ের অভিভাবকদের গতকাল শনিবার দুপুরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে ডাকা হয়। সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সারওয়ার মোর্শেদের উপস্থিতিতে তাঁরা ১৮ বছরের কমে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার ব্যাপারে মুচলেকা দেন।
ইউএনও এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদেরও অনুরোধ করা হয়েছে।